পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&Obe রবীন্দ্র-রচনাবলী নাই ; তাহার কাধে কাধ মিলাইয়া বৃহরচনা করিয়া চলিয়াছে, তাহারা মনে ভাবে আমরাই যুদ্ধ করিতেছি। কিন্তু যে-সেনাপতি অবকাশে নিমগ্ন হুইয়া দূর হইতে স্তন্ধভাবে দেখিতেছে, সৈন্যদের সমস্ত চলা তাহারই মধ্যে । নিশ্চলের যে ভয়ংকর চল তাহার রুজবেগ যদি দেখিতে চাও তবে দেখো ওই নক্ষত্রমণ্ডলীর আবর্তনে, দেখে যুগযুগান্তরের তাণ্ডব নৃত্যে। যে মাচিতেছে না তাহারই নাচ এই সকল চঞ্চলতায় । এত কথা যে বলিতে হইল তাহার কারণ, কবিশেখর কালিদাস যে আষাঢ়কে আপনার মাক্রান্তাচ্ছদের অমান মালাটি পরাইরা বরণ করিয়া লইয়াছেন তাহাকে ব্যস্ত-লোকের “আষাঢ়ে” বলিয়া অবজ্ঞা করে। তাহারা মনে করে যে মেধাবগুষ্ঠিত বর্ষণ-মঞ্জীর-মুখর মাসটি সকল কাজের বাহির, ইহার ছায়াবৃত প্রহরগুলির পসরায় কেবল বাজে কথার পণ্য। অন্যায় মনে করে না । সকল কাজের-বাহিরের যে দলটি যে অহৈতুকী স্বৰ্গসভায় আসন লইয়া বাজে-কথার অমৃত পান করিতেছে, কিশোর আষাঢ় যদি আপন আলোল কুস্তলে নবমালতীর মালা জড়াইয়া সেই সভার নীলকাস্তমণির পেয়াল ভরিবার ভার লইয়া থাকে, তবে স্বাগত, হে নবঘনশ্ৰাম, আমরা তোমাকে অভিবাদন করি। এস এস জগতের যত অকৰ্মণ্য, এস এস ভাবের ভাবুক, রসের রসিক,—আষাঢ়ের মৃদঙ্গ ওই বাজিল, এস সমস্ত খ্যাপার দল, তোমাদের নাচের ডাক পড়িয়াছে। বিশ্বের চির-বিরহবেদনার অশ্রু-উৎস আজ খুলিয়া গেল, আজ তাহ আর মানা মানিল না। এস গো অভিসারিকা, কাজের সংসারে কপাট পড়িয়াছে, হাটের পথে লোক নাই, চকিত বিদ্যুতের আলোকে আজ যাত্রায় বাহির হইবে—জাতীপুপসুগন্ধি বন্যস্ত হইতে সজল বাতাসে আহবান আসিল—কোন ছায়াবিতানে বসিয়া আছে বহুযুগের চিরজাগ্রত প্রতীক্ষা ! >Sペ> শরৎ ইংরেজের সাহিত্যে শরৎ প্রৌঢ়। তার যৌবনের টান সবটা আলগা इङ्ग नाहे, ওদিকে তাকে মরণের টান ধরিয়াছে ; এখনও সব চুকিয়া যায় নাই কেবল সৰ ঝরিয়া যাইতেছে। একজন আধুনিক ইংরেজ কবি শরংকে সম্ভাষণ করিয়া বলিতেছেন, “তোমার ওই শীতের আশঙ্কাকুল গাছগুলাকে কেমন যেন আজ জুতের মতো দেখাইতেছে ; হায় রে, তোমার ওই কুঞ্জবনের ভাঙা হাট, তোমার ওই ভিজা পাতার বিবাগি হইয়া বাছির