পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্তার ইচ্ছায় কর্ম ©©Ꮔ আমরা, এটা ফাকি । সে কুয়ে খোড়া হইল না, জলের কষ্ট রহিয়া গেল, আর আগুনের সেখানে বাধা নিমন্ত্রণ । । ፊ” এই ষে অটল দুর্দশা, এর কারণ,—গ্রামের যা-কিছু পূর্তকার্ব তা এ-পর্যন্ত পুণ্যের প্রলোভনে ঘটিয়াছে। তাই মানুষের সকল অভাবই পূরণ করিবার বরাত হয় বিধাতার পরে, নয় কোনো আগন্তকের উপর । পুণ্যের উমেদার যদি উপস্থিত না থাকে তবে এর জল না-খাইয়া মরিয়া গেলেও নিজের হাতে এক কোদাল মাটিও কাটিবে না । কেননা এরা এখনও সেই বুড়ির কোল থেকে নামে নাই যে-বুড়ি এদের জাতিকুল ধর্মকর্ম ভালোমন্দ শোওয়াবসা সমস্তই বাহির হইতে বাধিয়া দিয়াছে। ইহাদের দোষ দিতে পারি না, কেননা বুড়ি এদের মনটাকেই আফিম খাওয়াইয়া ঘুম পাড়াইয়াছে। কিন্তু অবাক হইতে হয় যখন দেখি, এখনকার কালের শিক্ষিত যুবকেরা, এমন কি, কালেজের তরুণ ছাত্রেরাও এই বুড়িতন্ত্রের গুণ গাহিতেছেন। ভারতবর্ষকে সনাতন ধাত্রীর কাখে চড়িতে দেখিয়া ইহাদের ভারি গর্ব ; বলেন, ওটা বড়ে উচ্চ জায়গা, ওখান হইতে পা মাটিতেই পড়ে না ; বলেন, ওই কাখে থাকিয়াই আত্মকতৃত্বের রাজদগু হাতে ধরিলে বড়ো শোভা হুইবে । অথচ স্পষ্ট দেখি, দুঃখের পর দুঃখ, দুর্ভিক্ষের পর দুর্ভিক্ষ ; যমলোকের যতগুলি চর আছে সবগুলিই আমাদের ঘরে ঘরে বাসা লইল । বাঘে ডাকাতে তাড়া করিলেও যেমন আমাদের অস্ত্ৰ তুলিবার হুকুম নাই তেমনি এই অমঙ্গলগুলো লাক দিয়া যখন ঘাড়ের উপর দাত বসাইতে আসে তখন দেখি সামাজিক বন্দুকের পাস নাই। ইহাদিগকে খেদাইবার অস্ত্র জ্ঞানের অন্ত্র, বিচারবুদ্ধির অস্ত্র। বুড়ির শাসনের প্রতি র্যাদের ভক্তি অটল তারা বলেন, “ওই অস্ত্রটা কি আমাদের একেবারে নাই ? আমরাও সায়ান্স শিখিব এবং যতটা পারি খাটাইব ।” অন্ত্র একেবারে নাই বলিলে অত্যুক্তি হয় কিন্তু অন্ত্র-পাসের আইনটা বিষম কড়া। অস্ত্র ব্যবহার করিতে দিয়াও যতটা না-দিতে পারা যায় তারই উপর বোলে৷ আন ঝোক । ব্যবহারের গণ্ডি এতই, তার একটু এদিকওদিক হইলেই এত দুর্জয় কানমলা, সমস্ত গুরুপুরোহিত তাগাতাবিজ সংস্কৃত শ্লোক ও মেয়েলি মন্ত্র এত ভরে ভয়ে সাবধানে বঁাচাইয়া চলিতে হয় যে, ডাকাত পড়িলে ভাকাতের চেয়ে অনভ্যাসের বন্দুকটা লইয়াই ফাপরে পড়িতে হয়। যাই হ’ক, পায়ের বেড়িটা অক্ষয় হ’ক বলিয়াই যখন আশীৰ্বাদ করা হইল তখন দয়ালু লোক এ-কথাও বলিতে বাধ্য যে, মানুষদের কাধে করিয়া বেড়াইতে প্রস্তুত হও। বত রাজ্যের জাতের বেড়া, আচারের বেড়া, মেরামত করিয়া পাকা कब्रांझे शक्षि পুনরুজ্জীবন হয়, যদি এমনি করিয়া জীবনের ক্ষেত্রকে বাধাগ্রস্ত ও বুদ্ধির ক্ষেত্রকে সংকীর্ণ