পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&\b8 রবীন্দ্র-রচনাবলী তেমনি আমাদের সমাজে, আমাদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের ধারণায়, দুর্বলতা যথেষ্ট আছে সে-কথা ঢাকিতে চাহিলেও ঢাকা পড়িবে না। তবু আমরা আত্মকতৃত্ব চাই। অন্ধকার ঘরে এককোণের বাতিটা মিটমিট করিয়া জলিতেছে বলিয়া যে আর-এককোণের বাতি জালাইবার দাবি নাই এ কাজের কথা নয়। যে-দিকের যে সলতে দিয়াই হ'ক আলো জালাই চাই। আজ মকুন্তত্বের দেয়ালি মহোৎসবে কোনো দেশই তার সব বাতি পুরা জালাইয়া উঠতে পারে নাই-তৰু উৎসব চলিতেছে। আমাদের ঘরের বাতিটা কিছুকাল হইতে নিবিয়া গেছে—তোমাদের শিখ হইতে যদি ওটাকে আলাইয়া লইতে যাই তবে তা লইয়া রাগারগি করা কল্যাণের নহে। কেননা, ইহাতে তোমাদের আলো কমিবে না, এবং উৎসবের আলো বাড়িয়া উঠিবে। উংসবের দেবতা আজ আমাদিগকে ভিতর হইতে ভাকিতেছেন। পাও! কি আমাদের নিষেধ করিয়া ঠেকাইয়া রাখিতে পারিবে ? সে যে কেবল ধনী যজমানকেই দেখিলে গদগদ হইয়া ওঠে, ক্যানাডা অস্ট্রেলিয়ার নামে যে স্টেশন পর্যন্ত চুটিয়া যায়— আর গরিবের বেলায় তার ব্যবহার উলটা—এটা তো সহিবে না, দের তা যে দেখিতেছেন। ইহাতে স্বয়ং অন্তৰ্বামী যদি লজ্জারূপে অন্তরে দেখা না দেন, তবে ক্রোধ রূপে বাহির হইতে দেখা দিবেন। কিন্তু আশার কারণটা উহাদের মধ্যে আছে, আমাদের মধ্যেও আছে। বাঙালিকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমি জানি আমাদের যুবকদের যৌবনধর্ম কখনোই চিরদিন ধারকরা বার্ধক্যের মুখোশ পরিয়া বিজ্ঞ সাজিবে না। আবার আমরা ইংরেজের মধ্যেও এমন মহাত্মা বিস্তর দেখিলাম র্যারা স্বজাতির কাছে লাঞ্ছন। সহিয়াও ইংরেজ ইতিহাসবৃক্ষের অমৃত ফলটি ভারতবাসীর অধিকারে আনিবার জন্য উৎসুক। আমাদের তরফেও আমরা তেমনি মানুষের মতো মাছুষ চাই যারা বাহির হইতে দুঃখ এবং স্বজনদের নিকট হইতে ধিক্কার সহিতে প্রস্তুত । যারা বিফলতার আশঙ্কাকে অতিক্রম করিয়াও মচুন্যত্ব প্রকাশ করিবার জন্য ব্যগ্র । 鼻 * . ভারতের জরবিহীন জাগ্ৰত ভগবান আজ আমাদের আত্মাকে আহবান করিতেছেন, যে আত্মা অপরিমেয়, যে আত্মা অপরাজিত, অমৃতলোকে যাহার অনন্ত অধিকার, অথচ ষে আত্মা আজ অন্ধ প্রথা ও প্রভুত্বের অপমানে ধুলায় মুখ লুকাইয়া। আঘাতের পর আঘাত বেদনার পর বেদনা দিয়া তিনি ভাকিতেছেন, আত্মানং বিদ্ধি। আপনাকে জানে । 曙 আজ আমরা সম্মুখে দেখিলাম বৃহৎ এই মানুষের পৃথিবী, মহৎ এই মানুষের ইতিহাস। মানুষের মধ্যে ভূমাকে আমরা প্রত্যক্ষ করিতেছি ; শক্তির রথে চড়িয়া