পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ઉન્મ রবীন্দ্র-রচনাবলী মনোগত অভিপ্রায়। আমার বিশ্বাস এই যে, এই সমন্বয়কার্যটি রবীন্দ্রনাথ মনে করিলেই ঈশ্বরপ্রসাদে সর্বাঙ্গসুন্দরব্রুপে মুনিম্পন্ন করিতে পারেন।” m আত্মপরিচয় প্রবন্ধ ছাত্রসমাজের অধিবেশনে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরে পঠিত হয়। সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের পত্রিকা তত্বকৌমুদী এই প্রবন্ধে বিবৃত মতের প্রতিবাদ করেন, রবীন্দ্রনাথ হিন্দু ব্রাহ্ম প্রবন্ধে তাহার প্রত্যুত্তর দেন । হিন্দু ব্ৰাহ্ম “আত্মপরিচয়” নামক প্রবন্ধে আমরা এই কথাটি বলিবার চেষ্টা করিয়াছিলাম যে, হিন্দু ব্রাহ্মর হিন্দুই, অর্থাৎ যে ব্যক্তি হিন্দু সে ব্রাহ্ম হইলেও হিন্দু, ব্রাহ্ম ন হইলেও হিন্দু। ইহাতে তত্ত্বকৌমুদী পত্রিকার সম্পাদক মহাশয় লিখিতেছেন যে, যেহেতু আদি ব্রাহ্মসমাজ সামাজিক বিষয়ে “উন্নতিশীল” ব্রাহ্মসমাজের অপেক্ষা অনেক পশ্চাতে পড়িয়াছেন “তখন সমগ্র ব্রাহ্মসমাজ হিন্দু কি না, এ কথা বিচার করিবার অধিকার আদি ব্রাহ্মসমাজের কাহারও নাই। উন্নতিশীল ব্রাহ্মগণ হিন্দুত্বের সংকীর্ণ গণ্ডী অনেককাল অতিক্রম করিয়াছেন।” পরম্পরের উন্নতির তারতম্যসম্বন্ধে আমরা কোনো কথাই কহিব না, কারণ ইহা আমাদের আলোচ্য বিষয় নহে। কিন্তু সমগ্র হিন্দুসমাজে পক্ষে যাহা অন্যায় তাহ যে ব্রাহ্মসমাজের পক্ষেও অন্যায় অন্তত এ কথাটা আমাদিগকে কর্তব্যের অনুরোধে বলিতে হইবে। নিশ্চয়ই আমাদের অনেক কুসংস্কার আছে। যেমন যেমন তাহা বুঝিতে পারিব তেমনি তাহার বন্ধন কাটাইয়া উঠিব এইরূপ আশা করি— কিন্তু আমাদের এরূপ সংস্কার আদৌ নাই যে, বিচার করিয়া সত্য নির্ণয় করিবার অধিকার কেবল কোনো বিশেষ উপাধি দ্বারা চিহ্নিত সমাজের লোকেরই আছে অন্ত সমাজের লোকের নাই। যদিচ আমি আদি ব্রাহ্মসমাজের সভ্য তথাপি ঈশ্বর আমার চিন্তা করিবার শক্তি সম্পূর্ণ অপহরণ করেন নাই ; এবং কে হিন্দু ও কে হিন্দু নয় ইহা আমার পক্ষে বিচার করিবার অধিকার যদিচ “উন্নতিশীল” সম্পাদক মহাশয় কাড়িয়া লইতে চান তথাপি মহন্তত্বের সকল মহৎ অধিকারই আমরা যাহার কাছ হইতে পাইয়াছি তিনি এ সম্বন্ধে আমাদের । কাহাকেও কোনো বাধা দিয়াছেন বলিয়া আমরা আদি ব্রাহ্মসমাজের লোকের বিশ্বাস করি না । ১ প্রবাসী, আষাঢ়, ১৪১৯ o * • ৭ “আদি সমাজ ও উন্নতিশীল ব্রাহ্মসমাজ", তত্ত্ব-কৌমুৰী, ১ বৈশাখ ১৩১৯