পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

δ. Αυ রবীন্দ্র-রচনাবলী হেরো পুরানো প্রাচীন ধরণী হয়েছে শ্যামলবরনী, যেন যৌবনপ্রবাহ ছুটেছে কালের শাসন টুটাতে। পুরানো বিরহ হানিছে, নবীন মিলন আনিছে, নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে৷ বাইরে থেকে মোতির মা। দিদি, ওরা ডাকতে এসেছে। आछा न (203) ওমা, মূৰ্ছা গৈছে। যা যা, তোরা শীগগির একটু জল নিয়ে আয়। ভয় নেই দিদি, এই-যে আমি আছি। তোমরা ভিড় কোরো না, এখনি আমি ওঁকে নিয়ে যাচ্ছি। ভয় করিস নে ভাই, ভয় করিস নে। কুমুদিনী উঠে বসল। এখনো ভয় করছে দিদি ? কুমুদিনী। না, আমার কিছু ভয় করছে না। এই আমার অভিসার। বাইরে অন্ধকার, ভিতরে আলো । মোতির মা। ওমা, বড়ো ঠাকুর যে এই দিকেই আসছে! কুমুদিনী। ছোটােবাউ, এখনি না, এখনি না— আর-একটুখানি পরে। পর্দােটা ফেলে দাও। মোতির মা। এই-যে এসে পড়েছেন, এখন পর্দা ফেললে অনৰ্থপাত হবে। তাই হােক, ফেলেই দিই। শ্যামাসুন্দরী ও মধুসূদনের প্রবেশ কুমুদিনীকে শোনাবার মতো গলা চড়িয়ে মধুসূদন। কী, হয়েছে কী? শ্যামাসুন্দরী। তা তো বলতে পারি নে। দাদা দাদা করেই বউ হেদিয়ে গেল। তুমিই জিজ্ঞাসা করেী-না, একটু বোসে কাছে। মধুসূদন। কী হবে! আমি তো ওর দাদা নই। শ্যামাসুন্দরী। মিছে রাগ করছঠাকুরপো। ওরা বড়ো ঘরের মেয়ে, পোষ মানতে সময় লাগবে। মধুসূদন। রোজ রোজ উনি যাবেন মুছো, আর আমি ওঁর মাথায় কবিরাজি তেল মালিশ করব, এইজন্যে কি ওঁকে বিয়ে করেছিলুম ? শ্যামাসুন্দরী। ঠাকুরপো, তোমার কথা শুনে হাসি পায়। আমাদের কালে কথায় কথায় মানিনীর মান ভাঙাতে হত, এখন নাহয় মুছে ভাঙাতে হয়।- ঠাকুরপো, অমন মন খারাপ কোরো না, দেখে সইতে পারি নে। ওই-যে আসছে বউ— কিন্তু ওর সঙ্গে রাগারগি কোরো না ভাই, ও ছেলেমানুষ। [ প্ৰস্থান কুমুদিনী বাইরে এসে দাঁড়াল মধুসূদন। বাপের বাড়ি থেকে মুছে অভ্যোস করে এসেছ বুঝি! কিন্তু আমাদের এখানে ওটার চলন নেই। তোমাদের ওই নুরনগরী চাল ছাড়তে হবে। আমার নেই, এই সাফ বলে দিলুম।