পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাটক ও প্রহসন Ο δ (ι কুমুদিনী। আমার যে আংটির দরকার ছিল সে তুমি পরতে বারণ করেছ, আর আমার আংটির দরকার নেই। এক বাক্স আংটি খুলে মধুসূদন। একবার দেখেই না চেয়ে। এর যেটা তোমার পছন্দ সেইটাই তুমি পরতে পাের। কুমুদিনী। তুমি যেটা হুকুম করবে। সেইটাই পরব। মধুসূদন। আমি তো মনে করি তিনটেই তিন আঙুলে মানাবে। কুমুদিনী। হুকুম করে তিনটিই পরি। মধুসূদন। আমি পরিয়ে দিই? কুমুদিনী। দাও পরিয়ে-- মধুসূদন আংটি তিনটি পরালে আর কিছু হুকুম আছে? মধুসূদন। বড়োবউ, রাগ করছ, কেন? কুমুদিনী। আমি একটুও রাগ করছি নে। মধুসূদন। আহা, যাও কোথা? শোনো, শোনো। কুমুদিনী। কী বলে। মধুসূদন। আচ্ছ, যাও। দাও, আংটিগুলো ফিরিয়ে দাও। কুমুদিনী তাই করিল शN3 b(6 |--- [কুমুদিনীর প্রস্থান নবীন! নবীনের প্রবেশ মধুসূদন। বড়োবউকে তোরা খেপিয়েছিস? নবীন। দাদা, কালই তো আমরা যাচ্ছি। তোমার কাছে ভয়ে ভয়ে টোক গিলে আর কথা কব না। আমি আজ এই স্পষ্ট বলে যাচ্ছি-- বউরানীকে খোপাবার জন্যে সংসারে আর কারও দরকার হবে না, তুমি একই তা পারবে। আমরা থাকলে তবু যদি-বা কিছু ঠাণ্ডা রাখতে পারতুম, কিন্তু সে তো তোমার সইবে না! মধুসূদন। জ্যাটামি করিস নে। রজবপুরে যাবার কথা তোরাই ওকে শিখিয়েছিস। নবীন। এ কথা ভাবতেই পারি। নে তো শেখােব কী? মধুসূদন। দেখ, এই নিয়ে যদি ওকে নাচাস, তোদের ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। নবীন। দাদা, এ-সব কথা বলছি কাকে? যেখানে বললে কাজে লাগে। সেখানে বলে গে। মধুসূদন। তোরা কিছু বলিস নি? নবীন। এই তোমার গা ছুঁয়ে বলছি, কল্পনাও করি নি। মধুসূদন। বড়োবউ যদি এখন জেদ ধীরে বসে, কী করবি তোরা? নবীন। তোমাকে ডেকে আনিব। তোমার পাইক বীরকন্দাজ পেয়াদা আছে, তুমি ঠেকাতে পারবে। তার পরে যুদ্ধের সংবাদ কাগজে রটলে মেজেবিউকে সন্দেহ কোরো না। মধুসূদন। চুপ কর। বড়োবউ যদি রািজবপুরে যেতে চায় তো যাক। আমি কিছু বলব না। নবীন। আমরা তাকে খাওয়াব কী করে ? মধুসূদন। তোমার স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে। যা, যা বলছি, বেরো ঘর থেকে। [প্ৰস্থান