পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> ふや রবীন্দ্র-রচনাবলী নবীন ও মোতির মা নবীন। মেজেবিউ, আমি একটা পাপকর্মের ভূমিকা রচনা করেছি। মোতির মা। সে শক্তি তোমার আছে। তার ফল হবে কী? নবীন। পাপের ফল হবে পুণ্য। অন্তত সেই আশা। মাতির মা। কী কুকীতি করেছ শুনি! নবীন। ব্যাঙ্কটস্বামী নাম দিয়ে এক গ্রহাচার্য খাড়া করেছি। মাদ্রাজি। মস্ত কুঁটি, কপালে তিলক। মোটা লালপোড়ে ধূতি, চটিজোড়া আধখানা নীেকের গড়নে। মোতির মা। জ্যোতিষি নাকি? নবীন। সাতপুরুষে না। ম্যাকিনন কোম্পানির আপিসে হিসেবের খাতা লেখে। চলনসই द९ळ अन् । মোতির মা। কী করবে। সে ? নবীন। তাকে দিয়ে যেটা বলতে চাই বলিয়ে নেব। মোতির মা। উলটো বলবে না তো? নবীন। খুব কষে তাকে তালিম দিয়ে নিয়েছি। মোতির মা। তোমার দাদা এ-সব মানে না যে। নবীন। ব্যাবসা যখন ভালো চলে তখন মানবার দরকার করে না। সম্প্রতি ওঁর লোকসানের কপাল পড়েছে, এইবার লাভের কপাল খুলবে দৈবজ্ঞের। মেতির মা। কথাটা তুললেই বড়ো ঠাকুর তোমাকে কষে বকুনি দেবেন। নবীন। সেটা বকুনির ভান, বুদ্ধির গুমর দেখাবার জন্যে। সেই গুমর ভাঙে ভয়ের তাড়া খেলেই। বোকামি বেরিয়ে পড়ে নির্লজ্জ হয়ে ভিতর থেকে, যখন বিপদ ঘাড়ে দেয় চাপ। মোতির মা। আমরা তো চলে যাচ্ছি, বুদ্ধির লঙ্কাকাণ্ড করবে। কখন? নবীন। এখনি। এই রাত্রেই। মোতির মা। এখনি ? কী বলো! নবীন। সময় কই! লোকটাকে বাইরের ঘরে বসিয়ে রেখেছি। শেষ চেষ্টা করে যাব। সতি্যু গ্রহ যদি আমাদের তাড়া করে তবে মিথ্যে গ্ৰহ লাগিয়ে তাকেই লাগাব তাড়া। মোতির মা। দিবেরাত্রি অনেক ভুল করে থাক, তার উপরে নাহয় আরো একটা হবে, বোঝার উপর শাকের আঁটি। ওই আসছেন বড়োঠাকুর, যাই আমি। [প্ৰস্থান মধুসূদনের প্রবেশ নবীন। দাদা, একটু দরকার আছে। মধুসূদন। কিসের দরকার? বিপ্রদাসবাবুর মোক্তারি করতে চাও? নবীন। এত বড়ো শক্তি আমার নেই। দরকার আমার নিজের। মধুসূদন। কী শুনি। নবীন। শুনলে তুমি রাগ করবে। মধুসূদন। না শুনলে আরো রাগ করব। ফল। বুঝবেন থেকে কে জােতিই এসেেছ তাতে পাের আনার ভাগ প্রশ্ন করতে মধুসূদন। কোথাকার মুর্থ। এ-সব বিশ্বাস কর নাকি? নবীন। সহজ অবস্থায় করি নে, ভয় লাগলেই করি।