পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

लक्षांद्र लिंशभ S6 a মন্ত্রটা খণ্ডন করবার জন্যে। আমার উপর খাটত না এ মন্ত্র, যদি একটু সম্ভব হত তা হলে সুন্টু নিশ্চই আমার ছেড়ে সুমের দিক তাকাত না, এ কথা আদি জাের করেই বলতে s' “বেশ কথা, কিন্তু ইতিহাসের গোড়ার দিকে অনেকটা ফাঁক পড়েছে, সেটা ভরিয়ে নিতে হবে। ওদের বিবাহসম্বন্ধ সন্ন্যাসী ঘটালো কী উপায়ে?” “প্ৰথমত সেনবংশ যে ক্ষত্রিয়, তারা যে কোনাে-এক খৃস্টশতাব্দীতে দক্ষিণ থেকে এসেছিল দিগবিজয় বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশে, সেইটে প্রমাণ করে হিন্দি অনুবাদসহ সংস্কৃততে লিখলে এক পুঁথি৷ কাশীর কোনো কোনো দ্রাবিড়ী পণ্ডিতের সমর্থন জুড়ে দিলে তার সঙ্গে। সন্ন্যাসী স্বয়ং সোেমশংকরের রাজ্যে গোল— প্রজারা চেহারা দেখেই তেত্রিশ কোটির মধ্যে কোন-এক দেবতার অংশাবতার বলে নিলে ওকে মাথায় করে। সভাপণ্ডিত শুদ্ধ মুগ্ধ হল আলাপে। কুমায়ুনের কোন পাহাড়ে এদের দুজনের ঘটালে সাক্ষাৎ। ওরা দোঁহে মিলে ঘোড়ায় চড়ে ফিরল দুৰ্গমে, শিকারে বেরোল বনে জঙ্গলে। বীরপুরুষের মন ভুলল অনেকখানি প্রকৃতির মোহে, অনেকখানি সন্ন্যাসীর মন্ত্রে, তার পর এই যা দেখছি।” “ইচ্ছা করছে তরুণ তাপস সংঘে আমিও যোগ দিই।” “কেন, সংসারতাপ নিবারণের জন্যে, না পেটের জ্বালা?” “It is Love's philosophy যা শুনলুম শেলির সঙ্গে তা মেলে না। কিন্তু মনের শান্তি পাবার জন্যে নিজের পক্ষে আশু তার প্রয়োজন।” “যেয়ো সংঘে, কেউ আপত্তি করবে না। কিন্তু তার আগে এমন একটা গল্প লিখে যাও যাকে নাম দিতে পারবে মোহমুদগর।” “শংকরের মোহমুদগর?” “হাঁ তাই। সত্য কথা লিখতে শেখে। ফু দিয়ে ফুলিয়ে নয়, আগুন দিয়ে জুলিয়ে।” বাঁশরির মুখ লাল হয়ে উঠেছে, দৃষ্টিতে জুলছে যেন ইস্পাতের ঝলসানি। পৃথীশ মনে মনে ভাবছে— কী সুন্দর দেখাচ্ছে একে। বাঁশরি একসময়ে চৌকি থেকে উঠে বললে, “বলবার কথা শেষ হল। এখন মফিজকে বলে আসি তোমার জন্যে কিছু খাবার নিয়ে আসুক।” পৃথীশ ছুটে এসে ওর হাত চেপে ধরলে, বললে, “খাবার চাই নে, তুমি যেয়ে না।” র হাত ছুটিয়ে নিয়ে হাে হাে করে হেসে উঠল। বললে, “আমাকে হঠাৎ তোমার “বেমানান গল্পের নায়িক বানিয়ে তুলো না, তোমার জানা উচিত ছিল আমি ভয়ংকর সত্যি।” ঠিক সেই সময়ে ড্রেসিং গাউন পরে ওর ভাই সতীশ ঢুকে পড়ল ঘরে। জিজ্ঞাসা করলে, “উচ্চ হাসির আওয়াজ শুনলাম যে।” Ar “উনি এতক্ষণ স্টেজের মুনুবাবুর নকল করছিলেন। ভারি মজা।” “পৃথীশবাবুর নকল আসে নাকি?” • “ওঁর বই পড়লেই তো টের পাওয়া যায়। শোনা, ওর জন্যে মফিজকে কিছু খাবার আনতে दल नN3 (७ों।' পৃথীশ বললে, “না দরকার নেই, কাজ আছে, দেরি করতে পারব না।” বলে দ্রুত নমস্কার ক’রে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। বাঁশরি পিছন থেকে চেচিয়ে বললে, “মনে থাকে যেন আজ বিকেলে সিনেমা আছে। তোমারই সেই পদ্মাবতী।” উত্তর এল, “সময় হবে না।” বাঁশরি মনে মনে বললে, সময় হবেই জানি। অন্যদিনের চেয়ে দুঘণ্টা আগে। সতীশ জিজ্ঞাসা করলে, “আচ্ছা, তুমি ওই পৃথীশের মধ্যে কী দেখতে পাও বলে দেখি।” “ওর বিধাতা ওকে যে পরীক্ষার কাগজ দিয়েছিলেন দেখতে পাই তার উত্তর। আর তার মাঝখানটাতে দেখি পরীক্ষকের কাটা দাগ।” ।