পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ ԳԵr NO. আপন অশ্রান্ত বেগে সৃষ্টি চলিয়াছে যাত্রা করি নিরস্তর দিবা-বিভাবিবী। স্তব্ধ যাহা পথপার্শ্বে অচৈতনা যা রহে না জেগে, ধূলি বিলুষ্ঠিত হয় কালের চরণঘাত লেগে। নদী যদি ক্লান্ত হয় মহাসমুদ্রের অভিসারে, অবরুদ্ধ হয়। পঙ্কভারে। নিশ্চল গৃহের কোণে কঁপে, স্তিমিত নিভৃতে যেই বাতি দরিদ্র আলোক তার লুপ্ত হয়, না ফুরাতে রাতি। যাত্রীর মশালে জুলে দীপ্ত আলো জাগ্ৰত নিশীথে, জানে না। সে আঁধারে মিশিতে। যাহার অস্তরে নাই অনাগত যুগের পাথেয় জানি সে কালের কাছে হেয়। কীৰ্তিনাশা স্মৃতিনাশা নির্মম স্রোতের ধারে ধারে— পড়ে আছে অতীতের পরিত্যক্ত খ্যাতি সারে সারে। আপনার অর্থ তার হারায়েছে, হারায়েছে। গতি অন্ধ রাতে হারায়েছে জ্যোতি। ' তাই স্বদেশের তরে, তারি লাগি ধ্বনিছে। প্রার্থনা, সেই দান লাগি, যাহা নহে জীৰ্ণপ্ৰাণ শুষ্ক শস্যকণা। উঠে না। অন্ধুর যার, দিনান্তের অবজ্ঞার দান, আজ গেলে কাল অবসান। পেয়েছে তোমার হাতে তব দেশ, কালের যে বর, হে বঙ্কিম, নহে সে স্থাবর। নব-সাহিত্যের উৎস উৎসারিত মন্ত্ৰস্পর্শে তব চির-চলমান গতি, জাগাইয়া প্ৰাণ অভিনব। এ-বঙ্গের চিত্তক্ষেত্রে, চলে স্রোত সম্মুখের টানে ফলবান ভবিষ্যৎ-পানে। তাই নিত্য ধ্বনিতেছে সে বাণীর তরঙ্গ-হিল্লোলে— হে বঙ্কিম, তব নাম তব খ্যাতি তারি স্রোতে দোলে। বঙ্গভারতীর সাথে মিলায়ে তোমার আয়ুগনি, তাই মোরা করি জয়ধ্বনি। : । কালিম্পঙ। জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়? ১৩৪৫ } মেদিনীপুরে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-৯১) স্মৃতিমন্দির নির্মাণ উপলক্ষে লিখিত। ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৮ তারিখে মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর-স্মৃতিসংরক্ষণ-সমিতির অধিবেশনে পঠিত। কবিতাটি স্মৃতিমন্দির প্রবেশ-উৎসবের (৩০ অগ্রহায়ণ ১৩৪৬) আমন্ত্রণাপত্রে রবীন্দ্রনাথের হস্তাক্ষরে মুদ্রিত হয়। ] ২১. জলধর সেনের (১৮৬১-১৯৩৯) মৃত্যু উপলক্ষে রচিত। N.N. রথীন্দ্রনাথ ‘কল্যাণীয় শ্ৰীমন রথীন্দ্রনাথের পঞ্চাশৎ বার্ষিকী জন্মোৎসব উপলক্ষে— রবীন্দ্রনাথের আশীৰ্বাদ' নামে পুস্তিকাকারে প্রচারিত। পুলিনবিহারী সেন -সম্পাদিত ‘রবীন্দ্ৰায়ণ' ঠাকুরের (১৮৮৮-১৯৬১), জন্মের পঞ্চাশৎবর্ষপূর্তি উপলক্ষে রচিত।