পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q& 8 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী সরকারি পদ অলংকৃত করেন ও পরিশেষে 'লৰ্ড” উপাধি লাভ করিয়া সহকারী ভারতসচিবরূপে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আসন লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ১৯২০ খৃষ্টাব্দে ইংল্যান্ডে গিয়া সহকারী ভারতসচিব লর্ড সিংহকে বহুভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। ডিসেম্বর ১৯২৫-এ শান্তিনিকেতন ও শ্ৰীনিকেতন পরিদর্শনে গিয়া লর্ড সিংহ দশ হাজার টাকা দান করেন; তঁহার প্রদত্ত অর্থে ‘সিংহ-সদন” নামক সুরমা গৃহটি নির্মিত হয়। ১৯২৬ খৃষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথের যুরোপভ্রমণের সময়ে তিনি তঁহার সহযাত্রী ছিলেন ও একই সঙ্গে অনেকগুলি নগর পরিক্রমা করেন। ৪ মার্চ ১৯২৮ কলিকাতায় লর্ড সিংহের জীবনাবসান হইলে রবীন্দ্রনাথ তাহার শ্ৰাদ্ধাসভায় যোগ দিয়াছিলেন। শোক-প্রবন্ধটি রচনার তারিখ ৭ চৈত্র ১৩৩৪ (২০ মার্চ ১৯২৮)। ২৬. বন্ধু মোহিতচন্দ্র সেনের কন্যা উমা গুপ্ত (১৯০৪-৩১) বা বুলা বাল্যাবধি রবীন্দ্রনাথের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন। ইহার 'বাতায়ন' (১৩৩৭) কাব্যগ্রন্থটির ভূমিকা" লিখিয়াছিলেন তিনি। প্ল্যানচেটের আসরে তিনি ভালো মিডিয়াম’ হইতে পারিতেন। রবীন্দ্রনাথ একাধিকবার র্তাহার সহায়তায় পরলোকচৰ্চা করিয়াছিলেন, হঁহার হস্ত-ধূত পেনসিলে রবীন্দ্রনাথের অনেক আত্মীয়-বন্ধু-ভক্তের অশরীরী আত্মার আশ্চর্য কথোপকথন লিপিবদ্ধ হইয়াছিল। ইনি দীর্ঘজীবী হন নাই। র্তাহার অকালবিয়োগের পর বর্তমান রচনাটি তাহার শ্ৰাদ্ধাসভায় পাঠ করিবার জন্য রবীন্দ্রনাথ ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ অমলচন্দ্ৰ হােমকে প্রেরণ করেন। ২৭. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে 'হিবাৰ্ট লেকচার" দিবার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ মাদ্রাজ হইতে ২৮ মে ১৯২৮ “শাস্তিলি' জাহাজে আরোহণ করেন ও পরদিন ২৯ মে পন্ডিচেরি বন্দরে জাহাজ পৌঁছিলে তিনি ক্রেনের সাহায্যে ভূমিতে অবতরণ করিয়া পন্ডিচেরি আশ্রমে গিয়া অরবিন্দ ঘোষ (শ্ৰীঅরবিন্দ, ১৮৭২-১৯৫০) -এর সহিত সাক্ষাৎ করেন। সেই সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা। এই রচনায় ব্যক্ত হইয়াছে। ২৮. কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৭৬-১৯৩৮) ত্রি-পঞ্চাশাৎ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তঁহাকে সংবর্ধনা জানাইবার জন্য য়ুনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ৩১ ভাদ্র ১৩৩৫ (১৬ সেপ্টেম্বর ১৯২৮) একটি সভা হয়। রবীন্দ্রনাথ সভায় উপস্থিত হইতে না পারিয়া যে আশীর্বাণী লিখিয়া পঠাইয়াছিলেন, তাহা কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী পাঠ করেন। ২৯, ২৭ শ্রাবণ ১৩৩৮ তারিখে লিখিত রচনাটি আশ্বিন ১৩৩৮-সংখ্যা 'প্রবাসীতে মুদ্রিত হইলে তাহার পাদটীকায় জানানো হয় : 'এই প্ৰবন্ধটি প্রেসিডেন্সি কলেজের বঙ্কিম-শরৎ সমিতির অনুরোধে লেখা এবং তঁাহারা শরৎচন্দ্র সম্বন্ধে তীহার আসন্ন জন্মদিনে যে পুস্তকখানি বাহির করিতেছেন তাহতে প্ৰকাশিত হইবে।” ৩০. শরৎচন্দ্রের একষটিতম জন্মোৎসব উপলক্ষে তীহাকে অভিনন্দন জানাইবার জন্য ‘রবিবাসর’-এর উদ্যোগে ১১ আশ্বিন ১৩৪৩ (২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৬) একটি সভা হয়। ‘রবিবাসর’-এর তৎকালীন অধিনায়ক’ রবীন্দ্ৰনাথ এই উপলক্ষে আমন্ত্রিত হইলে তিনি জানান, ২৫ আশ্বিন রবিবারে উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজিত হইলে ‘রবীন্দ্রের সমাগম অসম্ভব হবে না।’ ১১ আশ্বিনের উৎসবের সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ হইয়া গিয়াছিল, তাই উক্ত তারিখেই শরৎচন্দ্রের জন্মোৎসব সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়। ভবানীপুরে আশুতোষ কলেজ হলে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা 'পরিশোধ” নৃত্যনাট্যের অভিনয় উপলক্ষে রবীন্দ্ৰনাথ ২২ আশ্বিন কলিকাতায় যান ও পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২৫ আশ্বিন ১৩৪৩ (১১ অক্টোবর ১৯৩৬) রবিবার ‘রবিবাসর"- এর সভায় উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানটির প্রতিবেদনে “আনন্দবাজার পত্রিকা' (২৭ আশ্বিন) লেখে : ‘গত ২৫ আশ্বিন রবিবার পূর্বাস্তুে শ্ৰীযুক্ত অনিলকুমার দে সাহিত্যরত্ন মহাশয়ের বেলিয়াঘাটার শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় সাড়ে দশটার পর উপস্থিত হইলে সকলেই বিশেষ আনন্দিত হন।. রবিবাসরের অন্যতম সদস্য শ্ৰীযুক্ত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ৬০ বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়ায়