পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ রবীন্দ্র-রচনাবলী কাদম্বিনী কে ! ( হাস্য ) তাই বলি, এমন করে কাকে লিখলেন । ওমা, কত কথাই বলেছেন। আর-একবার ভালো করে সমস্তটা পড়ি। কিন্তু কী চমৎকার হাতের অক্ষর! একেবারে যেন মুক্তে বসিয়ে গেছে। [ নীরবে পাঠ পশ্চাৎ হইতে খাতা অন্বেষণে গদাইয়ের প্রবেশ কিন্তু ছন্দ থাকু না-থাক পড়তে তো কিছুই খারাপ হয় নি। সত্যি, ছন্দ নেই বলে আরো মনের সরল ভাবটা ঠিক যেন প্রকাশ হয়েছে। আমার বেশ লাগছে । আমার বোধ হয় ছেলেদের প্রথম ভাঙা কথা যেমন মিষ্টি লাগে কবিদের প্রথম ভাঙা ছন্দ তেমনি মিষ্টি । ( খাতা বুকে চাপিয়া ) এ খাতা আমি নিয়ে যাব । এ তে আমাকেই লিখেছেন। আমার এমনি আনন্দ হচ্ছে । ( প্রস্থানোদ্যম । পশ্চাতে ফিরিয়া গদাইকে দেখিয়া ) ওমা ! (মুখ আচ্ছাদন ) গদাই । ঠাকরুন, আমি একখানা খাতা খুজতে এসেছিলুম। ইন্দুমতীর দ্রুত পলায়ন জন্ম জন্ম কেবলই আমার খাতাই হারাক। কবিতার বদলে যা পেয়েছি কালিদাস র্তার কুমারসম্ভব শকুন্তলা বাধা রেখে এমন জিনিস পায় না ! [ মহা উল্লাসে প্রস্থান छृणॊ षष्; প্রথম দৃশ্য বাগবাজারের রাস্ত গদাই । আহা, এই বাড়িটা আমার শরীর থেকে আমার মনটুকুকে যেন শুষে নিচ্ছে, ব্লটিং যেমন কাগজ থেকে কালি শুষে নেয়। কিন্তু কোন দিকে সে থাকে এ পর্যন্ত কিছুই সন্ধান করতে পারলুম না। ঐ যে পশ্চিমের জানলার ভিতর দিয়ে একটা সাদা কাপড়ের মতন যেন দেখা গেল না ? না, ও তো নয়, ও তো একজন দাসী দেখছি। ও কী করছে ? একটা ভিজে শাড়ি শুকুতে দিচ্ছে। বোধ হয় তারই শাড়ি। আহা, নাগাল পেলে একবার স্পর্শ করে নিতুম। তা হলে এতক্ষণে র্তার স্বান হল। পিঠের উপরে ভিজে চুল ফেলে সাফ কাপড়টি পরে এখন কী করছেন! এই বাড়ির চৌকাঠ পার হইতে হুচট খাইয়। একজন বুড়ির কক্ষ হইতে তরকারির ঝুড়ি পড়িয়া গেল। ]