পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s१७ রবীন্দ্র-রচনাবলী নিবারণ। কেন বাপু, আমি তো তোমার মক্কেল নই। বিনোদ । আজে, আমাকে লজ্জা দেবেন না— আপনি বুঝতেই পারছেন— নিবারণ। না বাপু, আমি কিছুই বুঝতে পারি নে। আমরা সেকালের লোক। বিনোদ । আমার স্ত্রী আপনার ওখানে আছেন— নিবারণ। তা অবশু— তাকে তো আমরা ত্যাগ করতে পারি নে। বিনোদ । আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করে তাকে যদি আমার ওখানে পাঠিয়ে দেন— নিবারণ। বাপু, আবার কেন পালকি-ভাড়াটা লাগবে ? বিনোদ। আপনারা আমাকে কিছু ভুল বুঝছেন। আমার অবস্থা খারাপ ছিল বলেই আমার স্ত্রীকে—তা যাই হোক— তাকে ত্যাগ করবার অভিপ্রায় ছিল না। এখন আপনারই অনুগ্রহে তো— তা এখন তো অনায়াসে— নিবারণ। বাপু, এ তো তোমার পোষা পাখি নয়। সে যে সহজে তোমার ওখানে যেতে রাজি হবে, এমন আমার বোধ হয় না । বিনোদ । আপনি অনুমতি দিলে আমি নিজে গিয়ে তাকে অকুনয় বিনয় করে নিয়ে আসতে পারি । নিবারণ। আচ্ছা, সে বিষয় বিবেচনা করে পরে বলব। [ প্রস্থান বিনোদ । বুড়োও তো কম একগুঁয়ে নয় দেখছি। যা হোক এ পর্যস্ত রানীকে কিছু বলে নি বোধ হয়। চন্দ্রকাস্তের প্রবেশ বিনোদ। কী হে চন্দর! তুমি এখানে যে ! চন্দ্রকান্ত। নিবারণবাবু এই বাড়িতে কী কাজে এসেছেন শুনলুম। আজ তারই ওখানে আমার খাওয়ার পালা পড়েছে, বুড়ো ভুলে গেছেন কি না খবর নিতে এসেছি। খিদে পেয়েছে। তুমিও বুঝি নিবারণবাবুর খোজে এখানে এসেছ ? বিনোদ । সে কথা পরে হবে। কিন্তু, তুমি পালা করে থাছ, তার মানে তো বুঝতে পারছি নে চন্দরদী ! চন্দ্রকাস্ত। আর ভাই, মহা বিপদে পড়েছি । বিনোদ । কেন, কী হয়েছে ? চন্দ্রকাস্ত। কী জানি ভাই, কখন তোদের সাক্ষাতে কথায় কথায় কী কতকগুলো মিছে কথা বলেছিলুম, তাই শুনে ব্রাহ্মণী বাপের বাড়ি এমনি গা-ঢাকা হয়েছেন যে, কিছুতেই তার আর নাগাল পাচ্ছি নে।