পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষরক্ষা X39 ষে-বৎসর তোমার সঙ্গে অভাগার শুভবিবাহ হয় সে-বৎসর কলকাতা শহরে কি রাধুনি বামুনের মড়ক হয়েছিল ? ক্ষান্তমণি। আমি বলছি, আমার একশোবার ঘাট হয়েছে, আমাকে মাপ করে, আমি আর কখনো এমন কাজ করব না। এখন তুমি ঘরে চলো । চন্দ্রকান্ত। তবে একটু বোসো। নিবারণবাবু আমার জলখাবারের ব্যবস্থা করতে গেছেন— উপস্থিত ত্যাগ করে যাওয়াটা শাস্ত্রবিরুদ্ধ। ক্ষান্তমণি। আমি সেখানে সব ঠিক করে রেখেছি, তুমি এখনি চলো। চন্দ্রকাস্ত। বলে কী, নিবারণবাবু— বন্ধুগণ । ( নেপথ্য হইতে ) ৷ চন্দরদী ! ক্ষান্তমণি। ওই রে, আবার ওরা আসছে ! ওদের হাতে পড়লে আর তোমার রক্ষে নেই। চন্দ্রকান্ত । ওদের হাতে তুমি আমি দু জনে পড়ার চেয়ে একজন পড়া ভালো । শাস্ত্রে লিখছে : সর্বনাশে সমুংপন্নে অর্ধং ত্যজতি পণ্ডিত, অতএব এ স্থলে অর্ধাঙ্গের সরাই ভালো । ক্ষাস্তমণি । তোমার ওই বন্ধুগুলোর জালায় আমি কি মাথামোড় খুড়ে মরব। [ প্রস্থান বিনোদ গদাই ও নলিনাক্ষের প্রবেশ চন্দ্রকান্ত । কেমন মনে হচ্ছে বিহু ? বিনোদ । সে আর কী বলব, দাদা ! চন্দ্রকান্ত । গদাই, তোর স্বায়ুরোগের বর্তমান লক্ষণটা কী বল দেখি । গদাই । অত্যন্ত সাংঘাতিক। ইচ্ছে করছে, দিগ বিদিকে নেচে বেড়াই। চন্দ্রকান্ত। ভাই, নাচতে হয় তো দিকে নেচে, আর বিদিকে নেচে না । পূর্বে তোমার যেরকম দিগ ভ্রম হয়েছিল, কোথায় মির্জাপুর— কোথায় বাগবাজার ! গদাই। এখন ঠিক পথেই চলেছি, যাচ্ছি বাসরঘরের দিকে ; এই যে সামনেই ।

  • [ প্রস্থান

চন্দ্রকান্ত। সাদৃষ্টান্ত দেখে আমারও ঠিক পথে যাবার ইচ্ছে প্রবল হল। এখানেও আহার তৈরি, ঘরেও আহার প্রস্তুত— কিন্তু ঘরের দিকে ডবল টান পড়েছে। বিনোদ । ওহে চন্দরদী, চুপ চুপ! চন্দ্ৰকান্ত । কেন হে ?