পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

58 রবীন্দ্র-রচনাবলী চুলের গন্ধে ফুলের গন্ধে মিলে পিছে পিছে তব বাতাসে চিহ্ন দিলে বাসনার রেখা টানি । প্রভাত উঠিল ফুটি ; অরুণরাঙিমা দিগস্তে গেল ঘুচে, শিশিরের কণা কুঁড়ি হতে গেল মুছে, গাহিল কুঞ্জে কপোতকপোতী দুটি । ছায়াবীথি হতে বাহিরে আসিলে ধীরে ভরা জোয়ারের উচ্ছল নদীতীরে— প্রাণকল্লোলে মুখর পল্লিবাটে । আমি কহিলাম, “তোমাতে আমাতে চলো, তরুণ রৌদ্র জলে করে ঝলোমলো— নৌকা রয়েছে ঘাটে ।” স্রোতে চলে তরী ভাসি। জীবনের-স্মৃতি-সঞ্চয়-করা তরী দিনরজনীর মুখে দুখে গেছে ভরি, আছে গানে-গাঁথা কত কান্না ও হাসি । পেলব প্রাণের প্রথম পশরা নিয়ে সে তরণী-পরে পা ফেলেছ তুমি প্রিয়ে, পাশাপাশি সেথা খেয়েছি ঢেউয়ের দোলা । কখনো বা কথা কয়েছিলে কানে কানে, কখনো বা মুখে ছলোছলো ছনয়ানে চেয়েছিলে ভাষা-ভোলা । বাতাস লাগিল পালে ; ভাটার বেলায় তরী যবে যায় থেমে অচেনা পুলিনে কবে গিয়েছিলে নেমে মলিন ছায়ার ধূসর গোধূলিকালে ।