পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র রচনাবলী স্তুতি নিন্দ সেথায় সমান, ভেদহীন মন্দ ভালো, দুঃখস্থখভঙ্গী অর্থহীন, তুল্য অন্ধকার আলো, লুপ্ত লজ্জাভয়ের ব্যঞ্জনা । যুদ্ধে উদ্ধারিয়া সীতা পরক্ষণে প্রিয়হস্ত রচিতে বসিল তার চিতা ; সে পালার অবসানে নিঃশেষে হয়েছে নিরর্থক সে দুঃসহ দুঃখদাহ— শুধু তারে কবির নাটক কাব্যডোরে বাধিয়াছে, শুধু তারে ঘোষিতেছে গান, শিল্পের কলায় শুধু রচে তাহা আনন্দের দান । २ জনশূন্ত ভাঙাঘাটে আজি বৃদ্ধ বটচ্ছায়াতলে গোধূলির শেষ আলো আষাঢ়ে ধূসর নদীজলে মগ্ন হল । ওপারের লোকালয় মরীচিকাসম চক্ষে ভাসে। একা বসে দেখিতেছি মনে মনে, মম দূর আপনার ছবি নাট্যের প্রথম অক্ষভাগে কালের লীলায়। সেদিনের সদ্য-জাগা চক্ষে জাগে অস্পষ্ট কী প্রত্যাশার অরুণিম প্রথম উন্মেষ ; সম্মুখে সে চলেছিল, না জানিয়া শেষের উদ্দেশ, নেপথ্যের প্রেরণায়। জানা না-জানার মধ্যসেতু নিত্য পার হতেছিল কিছু তার না বুঝিয়া হেতু । অকস্মাৎ পথমাঝে কে তারে ভেটিল একদিন, দুই অজানার মাঝে দেশকাল হইল বিলীন সীমাহীন নিমেষেই ; পরিব্যাপ্ত হল জানাশোনা জীবনের দিগন্ত পারায়ে । ছায়ায়-আলোয়-বোন৷ আতপ্ত ফাঙ্কনদিনে মর্মরিত চাঞ্চল্যের শ্রোতে কুঞ্জপথে মেলিল সে ফুরিত অঞ্চলতল হতে কনকটাপার আভা । গন্ধে শিহরিয়া গেল হাওয়া শিথিল কেশের স্পর্শে । দুজনে করিল আসাষাওয়া অজানা অধীরতায় ।