পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• যাত্রী . లివి: ফেলেছিল, জামার মনের কৃতজ্ঞতা তাদের দিকে ছুটল। তারা মস্ত বড়ে কিছুই নয় ; তারা দেখা দিয়েছে কেউ বা বনের ছায়ায়, কেউ বা নদীর ধারে; কেউ বা ঘরের কোণে, কেউ বা পথের বঁাকে। তারা স্থায়ী কীর্তি রাখবার দল নয়, ক্ষমতার ক্ষয়বৃদ্ধি নিয়ে তাদের ভাবনাই নেই ; তারা চলতে চলতে দুটাে কথা বলেছে, সব কথা বলবার সময় পায় নি ; তারা কালস্রোতের মাঝখানে র্যাধ বাধবার চেষ্টা করে নি, তারই ঢেউয়ের উপর নৃত্য করে চলে গেছে, তারই কলম্বরে স্বর মিলিয়ে ; হেসে চলে গেছে, তারই আলোর বিলিমিলির মতো। তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললুম, আমার জীবনে ব্যুতে সত্যিকার ফসল ফলিয়েছে সেই আলোর, সেই উত্তাপের দূত তোমরাই। প্রণাম তোমাদের। তোমাদের অনেকেই এসেছিল ক্ষণকালের জন্য, আধো-স্বপ্ন, আধো-জাগার ভোরবেলায়. শুকতারার মতো। প্রভাত না হতেই অন্ত গেল।” মধ্যাহ্নে মনে হল তারা তুচ্ছ ; বোধ হল, তাদের ভূলেই গেছি। তার পরে সন্ধ্যার অন্ধকারে যখন নক্ষত্ৰলোক সমস্ত আকাশ eজুড়ে আমার মুখের দিকে চাইল তখন জানলুম, সেই ক্ষণিক তো ক্ষণিকা নয়, তারাই চিরকালের ; ভোরের স্বপ্নে বা সন্ধ্যাবেলার স্বপ্নাবেশে জানতে না-জানতে তারা যার , কপালে একটুখানি আলোর টিপ পরিয়ে দিয়ে যায় তাদের সৌভাগ্যের সীমা নেই। তাই মন বলছে, একদিন যারা ছোটো হয়ে এসেছিল আজ আমি যেন ছোটো হয়ে তাদের কাছে আর-একবার যাবার অধিকার পাই ; যারা ক্ষণকালের.ভান করে এসেছিল, বিদায় নেবার দিনে আর-একবার যেন তারা আমাকে বলে “তোমাকে চিনেছি", আমি যেন বলি “তোমাদের চিনলুম” ৷ ‘ · Er ৭ই অক্টোবর ১৯২৪ একজন অপরিচিত যুবকের সঙ্গে একদিন এক-মোটরে নিমন্ত্রণসভায় যাচ্ছিলুম। তিনি আমাকে কথাপ্রসঙ্গে খবর দিলেন যে, আজকাল পন্ত আকারে যে-সব রচনা করছি সেগুলি লোকে তেমন পছন্দ করছে না। যারা পছন্দ করছে না তাদের স্থযোগ্য প্রতিনিধিস্বরূপে তিনি উল্লেখ করলেন তার কোনো কোনো আত্মীয়ের কথা, সেই আত্মীয়ের কবি ; আর, যে সব পন্থরচনা লোকে পছন্দ করে না তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন আমার গানগুলো আর আমার ‘শিশু ভোলানাথ’ নামক আধুনিক কাব্যগ্রন্থ। তিনি বললেন, আমার বন্ধুরাও আশঙ্কা করছেন আমার কাব্য লেখবার শক্তি ক্রমেই মান হয়ে আসছে। 受 唱 কালের ধর্মই এই। মর্তলোকে বসন্তখতু চিরকাল থাকে না। মাহুষের ক্ষমতার ক্ষয় আছে, অবসান আছে। যদি কখনো কিছু দিয়ে থাকি, তবে মূল্য দেবার সময়