পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী কাঠাল বিচির মোরববা যা বানিয়ে দিতেন তিনি পিঠে ব’লে পৌষমাসে সবাই নিত কিনি । দাদা বলেন, “মেরিকবাটা হয়তো মিছেমিছিই, কিন্তু মুখে দিতে যদি, বলতে কাঠাল বিচিই ।” মোরববীতে ব্যাবসা গেল জ’মে, বেশ কিঞ্চিৎ টাকা জমল ক্রমে । একদিন এক চোর এসেছে তখন অনেক রাত, জানলা দিয়ে সাবধানে সে বাড়িয়ে দিল হাত । খুড়ি তখন চাটনি করতে তেল নিচ্ছেন মেপে, ধড়াল করে চোরের হাতে জানলা দিলেন চেপে । চোর বললে “উহু উহু’ ; খুড়ি বললেন, ‘আহা, বঁ হাত মাত্র, এইখানেতেই থেকে যাক লা তাহা ।” কেঁদে-কেটে কোনোমতে চোর তো পেল খালাস ; খুড়ি বললেন, মরবি, যদি এ ব্যাবসা তোর চালাস ।” দাদা বললেন, “চোর পালালো, এখন গল্প থামাই, ছ’দিন হয় নি ক্ষেীর করা, এবার গিয়ে কণমাই ।” আমরা টেনে বলাই ; বলি, “গল্প কেন ছাড়বে ।” দাদা বলেন, “রবার নাকি, টানলেই কি বাড়বে – কে ফেরাতে পারে তোদের অর্ণবদারের এই জোর, তার চেয়ে যে অনেক সহজ ফেরানো সেই চোর, আচ্ছা তবে শোন, সে মাসে গ্রহণ লাগল চাদে, শহর যেন বিরল নিবিড় মাহয-বোলা কাদে । খুড়ি গেছেন স্নান করতে বাড়ির দ্বারের পাশে, আমার তখন পূর্ণগ্রহণ ভিড়ের রাহগ্রালে । প্রাণটা যখন কণ্ঠাগত, মরছি যখন ভরে, গুপ্ত এসে তুলে নিল হঠাৎ কাধের পরে। তখন মনে হল, এ তে বিষ্ণুদূতের জয়, আর-একটুকু দেরি হলেই প্রাপ্ত হতেম গয়া ।