পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SU শ্রাবণ ১৩৪৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী কোনখানে এক পাটকলে সে করতেছে সর্দারি । এমন সময় নরম যখন হল পাটের বাজার মাইনে ওদের কমিয়ে দিতেই, মজুর হাজার হাজার ধর্মঘটে বাধল কোমর ; সাহেব দিল ডাক ; বললে, “মাধো, ভয় নেই তোর, আলগোছে তুই থাক । দলের সঙ্গে যোগ দিলে শেষ মরবি-যে মার খেয়ে * মাধো বললে, “মরাই ভালো এ বেইমানির চেয়ে ।” শেষপালাতে পুলিস নামল, চলল গুতোগণতা ; কারো পড়ল হাতে বেড়ি, কারো ভাঙল মাথা । মাধো বললে, “সাহেব, আমি বিদায় নিলেম কাজে, অপমানের অন্ন আমার সহ্য হবে না যে ” চলল সেথায় যে-দেশ থেকে দেশ গেছে তার মুছে, মা মরেছে, বাপ মরেছে, বাধন গেছে ঘুচে । পথে বাহির হল ওরা ভরসা বুকে আঁটি, ছেড়া শিকড় পাবে কি আর পুরোনো তার মাটি । আতার বিচি আতার বিচি নিজে পুতে পাব তাহার ফল, দেখব ব’লে ছিল মনে বিষম কৌতুহল । তখন আমার বয়স ছিল নয়, অবাক লাগত কিছুর থেকে কেন কিছুই হয় । দোতলাতে পড়ার ঘরের বারান্দাটা বড়ো, ধুলোবালি একটা কোণে করেছিলুম জড়ো । সেথায় বিচি পুতেছিলুম অনেক যত্ন করে, গাছ বুঝি আজ দেখা দেবে, ভেবেছি রোজ ভোরে । বারান্দাটার পূর্বধারে টেবিল ছিল পাতা, সেইখানেতে পড়া চলত , পুথিপত্র খাতা রোজ সকালে উঠত জমে দুর্ভাবনার মতো ;