পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৪ রবীন্দ্র-রচনাবলী আসন দিতে পারি। তুমি অনুরোধ করাতে যুদ্ধাজিংকে বিনা বিচারেই পদচ্যুত করতে হল। আরো অমাতা-বলি চাই তোমার ? স্বমিত্রা। তবে সেই ভালো। বিচার কোরো না । আমারই প্রার্থনা রাখে । কাশ্মীরের পঙ্গপালগুলো যদি কোনো অপরাধ না করেও থাকে তবু ওরা আমার রাত্ৰিদিনের লজ্জা । আমাকে তার থেকে বাচাও । বিক্রম। ওরা কলঙ্ক স্বীকার ক’রে বিপদ সামনে রেখে আমার পাশে দাড়িয়েছিল । তোমার কথাতেও ওদের ত্যাগ করতে পারব না । দেখো প্রিয়ে, রাজার হৃদয়েই তোমার অধিকার, রাজার কর্তব্যে নয় এই কথা মনে রেখেt_ স্বমিত্ৰা । মহারাজ, তোমার বিলাসে আমি সঙ্গিনী, তোমার রাজধর্মে আমি কেউ নই এ কথা মনে রেখে আমার মুখ নেই। [ প্রস্থান বিক্রম । শুনে যাও মহিষী । স্বমিত্রা । ( ফিরে এসে ) কী, বলো । Uৰিকম। তুমি জাগছ না কেন। কিসের এই স্বল্প আবরণ। সমস্ত আমার রাজার শক্তি নিয়ে একে সরাতে পারলেম না । আপনাকে প্রকাশ করে— দেখা দাও, ধরা দাও । আমাকে এই অত্যস্ত অদৃশু বঞ্চনায় বিড়ম্বিত কোরো না। । আমিও তোমাকে ওই কথাই বলছি। তুমি রাজা, আমি তোমার সম্পূর্ণ প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি নে— তোমার শক্তিকে অন্ধকারে ঢেকে রাখলে। তুমি জাগ নি । তুমি আমাকে কেড়ে নিয়ে এসেছ কাশ্মীর থেকে— সেই অপমান আমার ঘুচিয়ে দাও— আমাকে রাত্রীর পদ দিতে হবে। বিক্রম। আচ্ছ। আচ্ছা, আমার রাজকোষ তোমার পায়ের তলায় সম্পূর্ণ ফেলে দিচ্ছি— তুমি প্রজাদের দান করতে চাও, করে দান যত খুশি । তোমার দাক্ষিণ্যের প্লাবন বয়ে যাক এ রাজ্যে । স্বমিত্রা । ক্ষমা করে মহারাজ, তোমার কোষ তোমারই থাক। আমার দেহের অলংকার থাক্ আমার প্রজার জন্তে । অন্যায়ের হাত থেকে প্রজারক্ষায় যদি মহিষীর অধিকার আমার না থাকে তবে এ-সব তো বন্দিনীর বেশভূষা— এ বইতে পারব না। মহিষীকে যদি কর সেবিকাকেও পাবে, নইলে শুধু মালী ! সে আমি নই। Tঞ্জস্থান মন্ত্রীর প্রবেশ বিক্রম। যুধাজিতের নামে রানীর কাছে কে অভিযোগ করেছিল ? তুমি ?