পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లన রবীন্দ্র-রচনাবলী রত্নেশ্বর। আর কিছুই আনি নি আমার অভিযোগ ছাড়া, কিছু নেইও। দেবদত্ত। গ্রামের মানুষ তা বুঝতে পারছি। রত্নেশ্বর। কিসে বুঝলে, ঠাকুর । দেবদত্ত। এখনো এ শিক্ষা হয় নি যে, রাজা তোমাদের মুখ থেকে শুনতে চান রাজ্যে সমস্তই ভালো চলছে, সত্যযুগ, রামরাজত্ব । রত্নেশ্বর । সমস্তই যদি ভালো না চলে ? দেবদত্ত। তা হলে সেটা গোপন না করলে আরো মন্দ চলবে । রাজাকে অপ্রিয় কথা শোনানো রাজদ্ৰোহিতা । রত্নেশ্বর। আমাদের প্রতি যদি উৎপাত হয় ? দেবদত্ত। হয় যদি তো সে তোমাদের প্রতিই হল । রাজগকে জানাতে গেলে উৎপাত হবে রাজার প্রতি । রত্নেশ্বর। ঠাকুর, সন্দেহ হচ্ছে পরিহাস করছ। দেবদত্ত। পরিহাস করেন ভাগ্য। বর্তমান অবস্থাটা বুঝিয়ে বলি। আজ ফাত্তনের শুক্লাচতুর্দশী । এখানে চন্দ্রোদয়ের মুহূর্তে কেশরকুঞ্জে ভগবান মকরকেতনের পূজা, রাজার আদেশ । নাচগান বাজনা অনেক হবে, তার সঙ্গে তোমার কণ্ঠস্বর একটুও মিলবে না । রত্নেশ্বর । না মিলুক, কিন্তু রাজার চরণ মিলবে । দেবদত্ত । রাজাকে রাজসভায় পাওয়াই হচ্ছে পাওয়া, অস্থানে তার অরাজকত্ব । অপেক্ষা করো, কাল নিজে তোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাব । রত্নেশ্বর । ঠাকুর, তোমাদের সবুর লয়। আমার যে সর্বাঙ্গ জলে যাচ্ছে, প্রত্যেক মুহূর্ত অসহ । আমাদের সব চেয়ে দুর্ভাগ্য এই যে, যমযন্ত্রণাও যখন পাই, অপমানের শূলের উপর যখন চড়ে থাকি তখনো অপেক্ষ করে থাকতে হয় রাজশাসনের জন্তে, নিজের হাত পজু। ধিক্ বিধাতাকে । দেবদত্ত । এখন একটু থামো, ঐ মহারানী আসছেন । ওঁর কাছে আর্তনাদ করে ধৃষ্টতা কোরো না । রত্নেশ্বর। আমার সৌভাগ্য, আপনি এসেছেন মহারানী, সমস্ত রাস্ত ওঁরই তো দর্শন কামনা করে এসেছি । দেবদত্ত। যিনি দুঃখ পান তাকেই দুঃখ দিতে চাও তোমরা ? জান না, বিচারের ভার ওঁর পরে নেই, রাজ্যশাসন করেন রাজা । রত্নেশ্বর । মহারানী মা ! s