পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Уbro রবীন্দ্র-রচনাবলী জানি নে। ছাড়া পেয়েই দেখা করতে এসেছি। একটা নিবেদন আছে– শুনতেই হবে আমার কথা । সুমিত্রা । বলো । দেবদত্ত । আর সহ হয় না মহারানী । গ্রাম থেকে গ্রামে, নগর থেকে নগরে অগ্নিকাণ্ড দুর্ভিক্ষ রক্তপাত নারীনির্যাতন। পাপের নেশা জালস্করের সমস্ত সৈন্যকেই পেয়েছে— থামতে পারছে না, মাত্রা কেবলই বেড়ে চলেছে। আমি মহারাজকে গিয়ে অভিশাপ দিয়েছিলেম, বলেছিলেম, অহরহ যমরাজের কাছে প্রার্থনা করছি তিনি তোমাকে সরিয়ে নিয়ে যান। রাজা আমাকে কারারুদ্ধ করেছিলেন, প্রহরী দয়া করে ছেড়ে দিলে । আজ মহারাজকে কেউ নিষেধ করতে পারবে না একমাত্র তুমি ছাড়া । কুমারলেন। ঠাকুর, এমন কথা কী করে বলছ, সুমিত্রা যাবেন তার কাছে ? এ মন্দির থেকে ওঁর তো ফেরবার পথ নেই। এতে স্বর্গে মর্ত্যে ধিক্কার উঠবে যে । দেবদত্ত। আমি জানি বড়োই কঠিন ব্যাপার, এও জানি রাজা এখন প্রকৃতিস্থ নন। তবু বলছি দেবী স্বমিত্রা, আজ তুমি সকল মান-অপমান মুখ-দুখের অতীত— তুমি পবিত্র, পাপ তোমার কাছে কুষ্ঠিত হবে, তুমি এই বীভৎসের মধ্যে নির্বিকার চিত্তে নামতে পার । কুমারসেন। স্বমিত্রার কী ঘটতে পারে না-পারে সে কথা ভাববার সময় আজ নেই— কিন্তু সুমিত্রা কাশ্মীরের দেবতাকে অপমান করে এখান থেকে চলে যাবে সে অামি ঘটতে দেব না । দেবতার ধন হরণ করে তাকে মানুষের ভোগের ভাণ্ডারে নিয়ে যাবে আমাদের বংশের কন্যা ! 離 স্বমিত্রা । ভাই কুমার, তাকে এইখানে আহবান করে আনব । কুমারসেন । এইখানে ? এই দেবালয়ে ? সুমিত্রা । আস্থন এখানেই, নইলে তার মুক্তি কিছুতেই হবে না। আমার এই শেষ কাজ, র্তাকে বাচাতে হবে— তার মোহগ্রন্থি ছিন্ন করে দিয়ে চলে যাব । দেবদত্ত। এ কিন্তু বড়ো সংকটের কথা, মহারানী। অনেক পাপ সে করেছে, অবশেষে দুৰ্বত্ত যদি দেবালয়ে এসে দেবতার অসন্মান করে, পুণ্যতীর্থে যদি কলুষ আনে ? সুমিত্রা । ভয় নেই, ঠাকুর, কোনো ভয় নেই। আমার প্রভু, আমার হিরণ্যচ্যুতি সকল পাপ দগ্ধ করবেন, নিঃশেষে ভস্ম করবেন। সেই রুদ্র আমাকে গ্রহণ করেছেন, তার কাছ থেকে আমাকে ছিন্ন করে নিতে পারে এমন শক্তি কারো নেই। কুমার, তোমার সঙ্গে শংকর অাছে ? কুমারলেন । ওই যে সে প্রাঙ্গণে দাড়িয়ে ।