পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ శిeఏ ডিটেকটিভ আমি পুলিলের ডিটেকটিভ কর্মচারী। আমার জীবনে দুটিমাত্র লক্ষ্য ছিল— আমার স্ত্রী এবং আমার ব্যবসায়। পূর্বে একান্নবর্তী পরিবারের মধ্যে ছিলাম, সেখানে আমার স্ত্রীর প্রতি সমাদরের অভাব হওয়াতেই আমি দাদার সঙ্গে ঝগড়া করিয়া বাহির হইয়া আসি । দাদাই উপার্জন করিয়া আমাকে পালন করিতেছিলেন, অতএব সহসা সস্ত্রীক তাহার আশ্রয় ত্যাগ করিয়া আসা আমার পক্ষে দুঃসাহসের কাজ হইয়াছিল । কিন্তু কখনো নিজের উপরে আমার বিশ্বাসের ক্রটি ছিল না। আমি নিশ্চয় জানিতাম, স্বন্দরী স্ত্রীকে যেমন বশ করিয়াছি বিমুখ অদৃষ্টলক্ষ্মীকেও তেমনি বশ করিতে পরিব । মহিমচন্দ্র এ সংসারে পশ্চাতে পড়িয়া থাকিবে না । পুলিসবিভাগে সামান্তভাবে প্রবেশ করিলাম, অবশেষে ডিটেকটিভ-পদে উত্তীর্ণ হইতে অধিক বিলম্ব হইল না । উজ্জল শিখা হইতেও যেমন কজলপাত হয় তেমনি আমার স্ত্রীর প্রেম হইতেও ঈর্ষা এবং সন্দেহের কালিমা বাহির হইত। সেটাতে আমার কিছু কাজের ব্যাঘাত করিত ; কারণ পুলিলের কর্মে স্থানাস্থান কালাকাল বিচার করিলে চলে না, বরঞ্চ স্থানের অপেক্ষ অস্থান এবং কালের অপেক্ষা অকণলটারই চর্চা অধিক করিয়া করিতে হয়— তাহাতে করিয়া অামার স্ত্রীর স্বভাবসিদ্ধ সন্দেহ আরো যেন দুৰ্নিবার হইয়া উঠিত। সে আমাকে ভয় দেখাইবার জন্ত বলিত, “তুমি এমন যখন-তখন যেখানেসেখানে যাপন কর, কালেভদ্রে আমার সঙ্গে দেখা হয়, আমার জন্ত তোমার আশঙ্কা হয় না ?” আমি তাহাকে বলিতাম, “সন্দেহ করা আমাদের ব্যবসায়, সেই কারণে ঘরের মধ্যে সেটাকে আর আনি না ।” 藝 স্ত্রী বলিত, “সন্দেহ করা আমার ব্যবসায় নহে, উহা আমার স্বভাব, আমাকে তুমি লেশমাত্র সন্দেহের কারণ দিলে আমি সৰ করিতে পারি।” . ডিটেকটিভ লাইনে আমি সকলের সেরা হইব, একটা নাম রাখিব, এ প্রতিজ্ঞ আমার দৃঢ় ছিল। এ সম্বন্ধে যতকিছু বিবরণ এবং গল্প আছে তাহার কোনোটাই পড়িতে বাকি রাখি নাই। কিন্তু পড়িয়া কেবল মনের অসন্তোষ এবং অধীরতা বাড়িতে লাগিল । * কারণ, আমাদের দেশের অপরাধীগুলা তীক নির্বোধ, অপরাধগুলা নিজীব এবং