পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ २8१ র্তাহাকে অঙ্গুলিসংকেতে বসিবার অনুমতি করিয়া কাগজ হইতে মুখ না তুলিয়া কছিলেন, "কী বলিবার আছে, বাৰু।” নবেন্দু ঘড়ির চেন নাড়িতে নাড়িতে বিনীত কম্পিত স্বরে বলিল, “কাল আপনি অনুগ্রহ করিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গিয়াছিলেন, কিন্তু—* 鹽 সাহেব ভ্ৰকুঞ্চিত করিয়া একটা চোখ কাগজ হইতে তুলিয়া বলিলেন, “সাক্ষাৎ *fcis footfotto Babu, what nonsense are you talking " নবেন্দু "Beg your pardon ! ভূল হইয়াছে, গোল হইয়াছে” করিতে করিতে ঘৰ্মাপুত কলেবরে কোনোমতে ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিলেন। এবং সে রাত্রে বিছানায় শুইয়া কোনো দূরস্বপ্নশ্রুত মন্ত্রের ন্যায় একটা বাক্য থাকিয়া থাকিয় তাহার *tva offsqi 2sq t of CVs witsov, “Babu, you are a howling idiot I" পথে আলিতে আসিতে র্তাহার মনে ধারণা হইল যে, ম্যাজিস্টেট যে র্তাহার সহিত দেখা করিতে আসিয়াছিল সে কথাটা কেবল রাগ করিয়া সে অস্বীকার করিল। মনে মনে কছিলেন, ‘ধরণী দ্বিধা হও!” কিন্তু ধরণী তাহার অনুরোধ রক্ষা না করাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি আসিয়া পৌছিলেন । লাবণ্যকে আগিয়া কহিলেন, “দেশে পাঠাইবার জন্য গোলাপজল কিনিতে গিয়াছিলাম।” বলিতে-না-বলিতে কালেক্টরের চাপরাস-পরা জনছয়েক পেয়াদা আলিয়া উপস্থিত । সেলাম করিয়া হান্তমুখে নীরবে দাড়াইয়া রহিল। লাবণ্য হাসিয়া কহিল, “তুমি কনগ্রেসে চাদ দিয়াছ বলিয়া তোমাকে গ্রেফতার করিতে আসে নাই তো ?” পেয়াদীরা ছয়জনে বারো পাটি দম্ভাগ্রভাগ উন্মুক্ত করিয়া কহিল, “বকশিশ, বাবুসাহেব।” নীলরতন পাশের ঘর হইতে বাহির হইয়া বিরক্তস্বরে কছিলেন, “কিসের বকশিশ * পেয়াদীরা বিকশিতদন্তে কহিল, ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের সহিত দেখা করিতে গিয়াছিলেন, তাহার বকশিশ । লাবণ্য হাসিয়া কছিল, “ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আজকাল গোলাপজল বিক্রি ধরিয়াছেন মাকি। এমন অত্যন্ত ঠাণ্ডা ব্যবসায় তো তাহার পূর্বে ছিল না ।” হতভাগ্য নবেন্দু গোলাপজলের সহিত ম্যাজিস্ট্রেট-দর্শনের সামঞ্চস্ত সাধন করিতে গিয়া কী যে আবোলতাবোল বলিল তাহ কেহ বুৰিতে পারিল না। নীলরতন কছিল, "বকশিশের কোনো কাজ হয় নাই। বকশিশ নাছি মিলেগ।”