পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ое о রবীক্স-রচনাবলী অক্ষে, নিন্দ যাই মনের হরিষে, এ পড়া-মুখস্থ করার জিনিস নয়। এ আমরা আপনার প্রাণের মধ্যে দেখতে পাব, এবং যা দেখব সেটা একটি মেয়ের বিছানায় শুয়ে ঘুমোনোর চেয়ে অনেক বেশি। এই কথাটাকেই আর-এক ছন্দে লিখলে বিষয়টা ঠিকই থাকবে, কিন্তু বিষয়ের চেয়ে বেশি যেটা তার অনেকখানি বদল হৰে । শ্রাবণমেঘে তিমিরঘন শর্বরী, বরিযে জল কাননতল মর্মরি ॥ জলদরব-বাংকারিত বাঞ্চাতে বিজন ঘরে ছিলাম স্বর্থ-তজ্ঞাতে, অলস মম শিথিল তন্থ-বল্পরী। মুখর শিখী শিখরে ফিরে সঞ্চরি। এই ছন্দে হয়তো বাইরের ঝড়ের দোলা কিছু আছে কিন্তু মেয়েটির ভিতরের গভীর কথা ফুটল না। এ আর-এক জিনিস হল । ĻI ছন্দ কবিতার বিষয়টির চার দিকে আবর্তন করছে। পাতা যেমন গাছের ডাটার চার দিকে ঘুরে ঘুরে তাল রেখে ওঠে এও সেইরকম । গাছের বস্তু-পদার্থ তার ডালের মধ্যে, গুড়ির মধ্যে, মজ্জাগত হয়ে রয়েছে ; কিন্তু তার লাবণ্য, তার চাঞ্চল্য, বাতাসের সঙ্গে তার আলাপ, আকাশের সঙ্গে তার চাউনির বদল, এ সমস্ত প্রধানত তার পাতার ছন্দে । পৃথিবীর আহিক এবং বাৰ্ষিক গতির মতে কাব্যে ছন্সের আবর্তনের দুটি অঙ্গ আছে, একটি বড়ো গতি, আর-একটি ছোটো গতি। অর্থাৎ চাল এবং চলন। প্রদক্ষিণ এবং পদক্ষেপ। দৃষ্টান্ত দেখাই । o শারদ চন্দ্র পবন মন্দ, বিপিন ভরল , কুসুমগন্ধ। এরই প্রত্যেকটি হল চলন । এমন আটটি চলনে এই ছন্দের চাল সারা হচ্ছে। অর্থাৎ, ছয়ের মাত্রায় এ পা ফেলছে এবং আটের মাত্রায় ঘুরে আসছে। শারদ চন্দ্র এই কথাটি ছয় মাত্রার, শারদ তিন এবং ‘চন্দ্রও তিন । বলা বাহুল্য, যুক্ত অক্ষরে ছুই অক্ষরের মাত্রা আছে, এই কারণে শারদ চন্দ্র’ এবং ‘বিপিন ভরল” ওজনে একই। > २ Vo Q শারদ চন্দ্র পবন মন্দ, বিপিন তরল কুহুমগন্ধ, (t © o Եফুর মল্লি মালতি বুখি মৰ্ত্তমধুপ- ভোরনী। প্রদক্ষিণের মাত্রার চেয়ে পদক্ষেপের মাত্রার পরেই ছন্দের বিশেষত্ব বেশি নির্ভর