পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী وهاجOا দেহসংস্থান এর উলটো ; তার প্রথমভাগে আট, শেষভাগে দশ , তার গৌরবট ক্রমেই প্রশস্ত হয়ে উঠেছে। ছোটো পয়ারের ছিব্‌লেমির একটা পরিচয় দেওয়া যাক । i খুব তার বোলচাল, সাজ ফিট্‌ফাট, তক্রার হলে আর নাই মিটমাট । চশমায় চমকায় আড়ে চায় চোখ, কোনো ঠাই ঠেকে নাই কোনো বড়ো লোক । এর ভাগগুলোকে কাটা-কাটা ছোটো-ছোটো করে হ্রস্বস্বরে হসন্তবর্ণে ঘনঘন ঝোক দিয়ে এর চটুলতা বাড়িয়ে দেওয়া গেছে। এখানে এটা পাতলা কিরিচের মতো। একেই আবার যুগ্মধ্বনির যোগে মজবুত করে খাড়া করে তোলা যায়। বাক্য তার অনর্গল মল্পসজ্জাশালী, তর্কযুদ্ধে উগ্র তেজ, শেষ যুক্তি গালি । ভ্ৰকুটিপ্রচ্ছন্ন চক্ষু কটাক্ষিয়া চায়, কুত্রাপিও মহত্বের চিহ্ন নাহি পায় । যেখানে-সেখানে নানাপ্রকার অসমান ভার নিয়েও পয়ারের পদস্খলন হয় না, এই তত্ত্বটির মধ্যে অসামান্ততা আছে । অন্য কোনো ভাষার কোনো ছন্দে এরকম স্বচ্ছন্দতা এতটা পরিমাণে অাছে বলে আমি তো জানি নে । এর কৌশলট কোনখানে যখন ভেবে দেখা যায় তখন দেখি, পয়ারে প্রত্যেক পদের মাঝখানে ও শেষে যে দুটো হাফ ছাড়বার যতি আছে সেইখানেই তার ভারসামঞ্জস্ত হয়ে থাকে। নি:স্বতাসংকোচে দিন । অবসর হলে নিভৃতে নিঃশব্দ সন্ধ্যা | নেয় তারে কোলে । গণনা করে দেখলে ধরা পড়ে, এই পয়ারের দুই লাইনে ধ্বনিভারের সাম্য নেই। তবু যে টলমল করতে করতে ছন্দটা কৰ্ণত হয়ে পড়ে না, তার কারণ ডাইনে-বায়ে যতির লগির ঠেকা দিয়ে দিয়ে তাকে চালিয়ে নেওয়া হয় । চতুষ্পদ জন্তু যেমন তার ভারী দেহটাকে দুইজোড়া পায়ের দ্বারা দুই দিকে ঠেকাতে ঠেকাতে চলে সেইরকম। পয়ারের প্রকৃত রূপ চোদটা অক্ষরে নয়, সেটা প্রথম অংশের আট অক্ষর ও দ্বিতীয় অংশের ছয় অক্ষরের পরবর্তী দুই যতিতে। অজগর সমস্ত দেহটা নিয়ে চলে। তার দেহে মুগু এবং ধড়ের মধ্যে ভাগ নেই। ঘোড়ার দেহে সেই ভাগ আছে। তার মূওটার পরে যেখানে গলা সেখানে একটা যতি, ধড়ের শেষ ভাগে যেখানে ক্ষীণ কটি সেখানেও আরএকটা । এই বিভক্তভাবের দেহকে সামলিয়ে নিয়ে সে চার পা ফেলে চলে। পয়ারেরও