পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী "לאס বোঝা সামলিয়ে চলা সম্ভব । আজ পর্যন্ত জীবলোকে জুড়িওয়াল পায়ের পরিবর্তে চাকার উদ্ভব কোথাও হল না ; কেননা, চাকা না থেমে গড়িয়ে চলে, চলার সঙ্গে থামার সামঞ্জস্ত তার মধ্যে নেই। দুইমূলক সমমাত্রায় দুই পায়ের চাল, তিনমূলক অসমমাত্রায় চাকার চাল। দুই-পা-ওয়ালা জীব উচুনিচু পথের বাধা ডিঙিয়ে চলে যায়, পয়ারের সেই শক্তি । চাকা বাধায় ঠেকলে ধাক্কা খায়, ত্রৈমাত্রিক ছন্দের সেই দশা । তার পথে যুগ্মম্বর যাতে বাধা হয়ে না দাড়ায় সেই চেষ্টা করতে হবে । অধীর বাতাস এল সকালে, বনেরে বৃথাই শুধু বকালে । দিনশেষে দেখি চেয়ে, ঝরা ফুলে মাটি ছেয়ে— লতারে কাঙাল ক’রে ঠকালে । এ ছন্দ পয়ারজাতীয়, টেনিস-খেলোয়াড়ের আধা পায়জামার মতো বহরটা নীচের দিকে ছাট । এ ছন্দে তাই যুগ্মম্বর যেমন খুশি চলে। নবারুণচন্দনের তিলকে দিকূললাট এঁকে আজি দিল কে । বরণের পাত্র হাতে উষা এল স্থপ্রভাতে, জয়শঙ্খ বেজে ওঠে ত্রিলোকে । শরতে শিশিরবাতাস লেগে জল ভ’রে আসে উদাসী মেঘে । বরবন তবু হয় না কেন, ব্যথা নিয়ে চেয়ে রয়েছে যেন । এখানে তিন মাত্রার ছন্দ গড়িয়ে চলেছে। চাকার চাল, পা-ফেলার চাল নয় ; তাই যুগ্মবর্ণের স্বেচ্ছাচারিত এর সইবে না। চাষের সময়ে যদিও করি নি হেলা, ভুলিয়া ছিলাম ফসল-কাটার বেলা । পয়ারের মতোই চোদটা অক্ষরে পদ, কিন্তু জাত আলাদা । তিন মাত্রার চাকায় চলেছে। পদাতিকের সঙ্গে চক্রীর মেলে না ।