পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

මම්)” রবীন্দ্র-রচনাবলী বিদায়দিনে যবে | ফাটে বুক, সেদিনো দেখেছি তো । হালিমুখ । তার পরে তেরো মাত্রার প্রস্তাবটা শুনতে লাগে খাপছাড়া এবং নতুন, কিন্তু পয়ার থেকে এক মাত্রা হরণ করতে দুঃসাহসের দরকার হয় না। সে কাজ অনেকবার করেছি, তা নিয়ে নালিশ ওঠে নি। যথা— গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা | এক মাত্রা যোগ করে পয়ারের জ্ঞাতিবৃদ্ধি করাও খুবই সহজ । যথা— হে বীর, জীবন দিয়ে মরণেরে জিনিলে, নিজেরে নিঃস্ব করি বিশ্বেরে কিনিলে । বোলো মাত্রার ছন্দ দুর্লভ নয়। অতএব দেখা যাক সতেরো মাত্রা— নদীতীরে দুই। কুলে কুলে। কাশবন দুলি | ছে । পূর্ণিমা তারি। ফুলে ফুলে। আপনারে ভুলি । ছে । আঠারো মাত্রার ছন্দ সুপরিচিত। তার পরে উনিশ— ঘন মেঘভার গগনতলে, বনে বনে ছায়া তারি, একাকিনী বলি নয়নজলে কোন বিরহিণী নারী। তার পরে কুড়ি মাত্রার ছন্দ স্বপ্রচলিত। একুশ মাত্রা, যথা— বিচলিত কেন মাধবীশাখা, মঞ্জরি কাপে থরথর । কোন কথা তার পাতায় ঢাকা চুপিচুপি করে মরমর। তার পরে— আর কাজ নেই। বোধ হয় যথেষ্ট প্রমাণ করতে পেরেছি যে, বাংলায় নতুন ছন্দ তৈরি করতে অসাধারণ নৈপুণ্যের দরকার করে না। সংস্কৃত ভাষায় নূতন ছন্দ বানানো সহজ নয়, পুরানো ছন্দ রক্ষণ করাও কঠিন। যথানিয়মে দীর্ঘত্বস্ব স্বরের পর্যায় বেঁধে তার সংগীত । বাংলায় সেই দীর্ঘধবনিগুলিকে দুইমাত্রায় বিশ্লিষ্ট করে একটা ছন্দ দাড় করানো যেতে পারে, কিন্তু তার মধ্যে মূলের মর্যাদা থাকবে না। মন্দাক্রাস্তার বাংলা রূপান্তর দেখলেই তা বোঝা যাবে।