পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छ्न्न \లిలీన যক্ষ সে কোনো জনা আছিল আনমনা, লেবার অপরাধে প্রভুশাপে হয়েছে বিলয়গত মহিমা ছিল যত, বরবকাল বাপে দুখতাপে । নির্জন রামগিরি শিখরে মরে ফিরি একাকী দূরবাসী প্রিয়াহার যেথায় শীতল ছায় ঝরনা বহি যায় সীতার স্নানপুত জলধারা । মাস পরে কাটে মাস, প্রবালে করে বাস প্রেয়সীবিচ্ছেদে বিমলিন ; কনকবলয়-খলা বাহুর ক্ষীণ দশা, বিরহদুখে হল বলহীন । একদা আষাঢ় মাসে প্রথম দিন আসে, যক্ষ নিরখিল গিরি’পর ঘনঘোর মেঘ এসে লেগেছে সান্থদেশে, দস্ত হানে যেন করিবর। কীর্তিক ১৩৩৯ २

  • উপরের প্রবন্ধে লিখেছি "আধার রজনী পোহালো’ গানটি নয় মাত্রার ছন্দে রচিত । ছন্দতত্বে প্রবীণ অমূল্যবাবু ওর নয়-মাত্রিকতার দাবি একেবারে নামঞ্জুর করে দিলেন । আর কারো হাত থেকে এ রায় এলে তাকে আপিল করবার যোগ্য বলেও গণ্য করতুম না, এ ক্ষেত্রে ধাধা লাগিয়ে দিলে। রাস্তার লোক এসে যদি আমাকে বলে তোমার হাতে পাচটা আঙুল নেই, তা হলে মনে উদবেগের কোনো কারণ ঘটে না। কিন্তু, শারীরতত্ত্ববিদ এসে যদি এই সংবাদটা জানিয়ে যান তা হলে দশবার করে নিজের আঙুল গুনে দেখি, মনে ভয় হয়, অঙ্ক বুঝি ভুলে গেছি। অবশেষে নিতান্ত হতাশ হয়ে স্থির করি, যে-কটাকে এতদিন আঙুল বলে নিশ্চিন্ত ছিলুম বৈজ্ঞানিক মতে তার সব-কটা আঙুলই নয় ; হয়তো শাস্ত্ৰবিচারে জানা যাবে যে, আমার আঙুল আছে মাত্র তিনটি, বাকি দুটো বুড়ে আঙুল আর কড়ে আঙুল, তার হরিজন-শ্ৰেণীয়।

বর্তমান তর্কে আমার মনে সেইরকম উজবেগ জন্মেছে । আঁধার রজনী পোহালো’ চরণের মাত্রাসংখ্যা যে দিক থেকে যেমন করে গ’নে দেখি, নয় মাত্রায় গিয়ে ঠেকে । অমূল্যবাবু বললেন, এটা তো নয় মাত্রার ছন্দ নয়ই, বাংলা ভাষায় আজও নয় মাত্রার উদ্ভব হয় নি, হয়তো নিরবধিকালে কোনো এক সময়ে হতেও পারে। তিনি বলেন, বাংলা ছন্দ দশ মাত্রাকে মেলেছে, নয় মাত্রাকে মানে নি । এ কথায় আরো আমার ধাধা লাগল। : অমূল্যবাবু পরীক্ষা করে বলছেন, এ ছন্দে জোড়ের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। "আঁধার রজনী’ পর্যন্ত এক পর্ব, এইখানে একটা ফাক ; তার পরে ‘পোহালো’ শব্দে তিন মাত্রার একটা পঙ্গু পৰ্বাঙ্গ ; তার পরে পুরো যতি। অর্থাৎ, এ ছন্দে ছয়