পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'LAb” রবীন্দ্র-রচনাবলী অনন্তরূপ ছিষ্ট করেন সাই, শুনি মানবের তুলনা কিছুই নাই। দেব-দেবতাগণ করে আরাধন জন্ম নিতে মানবে , এই মাহুষে হবে মাধুর্যভজন তাইতে মানুষ-রূপ গঠিল নিরঞ্জন। এবার ঠকলে আর না দেখি কিনগর, লালন কয় কাতরভাবে । এই ছন্দের ভঙ্গি একঘেয়ে নয় । ছোটো বড়ো নানা ভাগে বাকে বাকে চলেছে। সাধুপ্রসাধনে মেজে-ঘষে এর শোভা বাড়ানো চলে, আশা করি এমন কথা বলবার সাহস হবে না কারো । এই খাটি বাংলায় সকল রকম ছন্দেই সকল কাব্যই লেখা সম্ভব, এই আমার বিশ্বাস । ব্যঙ্গকবিতায় এ ভাষার জোর কত ঈশ্বর গুপ্তের কবিতা থেকে তার নমুনা দিই। কুইন ভিক্টোরিয়াকে সম্বোধন করে কবি বলছেন— তুমি মা কল্পতরু, আমরা সব পোষণ গোরু শিখি নি শিঙ-বাকানো, কেবল খাব খোল-বিচিলি ঘাস । যেন রাঙা আমলা তুলে মামলা গণমলা ভাঙে না, আমরা ভূষি পেলেই খুশি হব ঘুষি খেলে বঁচিব না। কেবল এর হাসিট নয়, এর ছন্দের বিচিত্র ভঙ্গিটা লক্ষ করে দেখবার বিষয় । অথচ, এই প্রাকৃত-বাংলাতেই ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য লিখলে যে বাঙালিকে লজ্জা দেওয়া হত সে কথা স্বীকার করব না । কাব্যটা এমন ভাবে আরম্ভ করা যেত— যুদ্ধ তখন সাঙ্গ হল বীরবাহু বীর যবে বিপুল বাঁধ দেখিয়ে হঠাৎ গেলেন মৃত্যুপুরে