পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন ৩২১ উপাধ্যায়। কী বলছিলে ? সুভদ্র । আমি পাপ করেছি। \ উপাধ্যায়। পাপ করেছ ? আচ্ছ বেশ । তা হলে বোসে । শোনা যাক । স্বভদ্র । আমি আয়তনের উত্তর দিকের— উপাধ্যায়। বলো, বলে, উত্তর দিকের দেওয়ালে অঁাক কেটেছ ? স্বভদ্র । না, আমি উত্তর দিকের জানলায়— উপাধ্যায়। বুঝেছি, কুকুই ঠেকিয়েছ। তা হলে তো সে দিকে আমাদের যতগুলি যজ্ঞের পাত্র অাছে সমস্তই ফেলা যাবে। সাত মাসের বাছুরকে দিয়ে ঐ জানলা না চাটাতে পারলে শোধন হবে না । পঞ্চক । এটা আপনি ভুল বলছেন । ক্রিয়াসংগ্রহে আছে ভূমিকুম্মাণ্ডের বোট দিয়ে একুবার – উপাধ্যায়। তোমার তো স্পর্ধা কম দেখি নে। কুলদত্তের ক্রিয়াসংগ্রহের অষ্টাদশ অধ্যায়টি কি কোনোদিন খুলে দেখা হয়েছে ? d পঞ্চক । ( জনাস্তিকে ) স্বভদ্র, যাও তুমি।— কিন্তু কুলদত্তকে তো আমি — উপাধ্যায়। কুলদত্তকে মান না ? আচ্ছা, ভরদ্বাজ মিশ্রের প্রয়োগপ্রজ্ঞপ্তি তো মানতেই হবে— তাতে— সুভদ্র । উপাধ্যায়মশাই, আমি ভয়ানক পাপ করেছি। পঞ্চক। আবার । সেই কথাই তো হচ্ছে। তুই চুপ কর। উপাধ্যায়। স্বভত্র, উত্তরে দেয়ালে যে অঁাক কেঁটেছ সে চতুষ্কোণ, ন৷ গোলাকার ? স্বভদ্র । আঁক কাটি নি। আমি জানল। খুলে বাইরে চেয়েছিলুম। ബു. উপাধ্যায় । ( বসিয়া পড়িয়া ) আঃ সর্বনাশ ! করেছিস কী ! আজি তিনশো পয়তাল্লিশ বছর ঐ জানলা কেউ খোলে নি তা জানিস ? সুভদ্র । আমার কী হবে । পঞ্চক । (স্বভদ্রকে আলিঙ্গন করিয়া) তোমার জয়জয়কার হবে স্বভদ্র । তিনশো পয়তাল্লিশ বছরের আগল তুমি ঘুচিয়েছ। তোমার এই অসামান্ত সাহস দেখে উপাধ্যায়মশায়ের মুখে আর কথা নেই। [ সুভদ্রকে টানিয়া লইয়া প্রস্থান উপাধ্যায়। জানি নে কী সর্বনাশ হবে । উত্তরের অধিষ্ঠাত্রী যে একজটা দেবী । বালকের দুই চক্ষু মুহূর্তেই পাথর হয়ে গেল না কেন তাই ভাবছি। যাই, আচার্যদেবকে জানাই গে। [ প্রস্থান 孤ー>>|R>