পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eరి রবীন্দ্র-রচনাবলী পঞ্চক। নতুনও আছে, পুরোনোও আছে। দ্বিতীয় শোণপাংশু । আচ্ছা, এলে খবর দিয়ো– একবার দেখব তাকে । পঞ্চক । তোরা দেখবি কী রে । সর্বনাশ । তিনি তো শোণপাংশুদের গুরু নন । র্তার কথা তোদের কানে পাছে এক অক্ষরও যায় সেজন্যে তোদের দিকের প্রাচীরের বাইরে সাত সার রাজার সৈন্ত পাহারা দেবে। তোদেরও তো গুরু আছে— তাকে নিয়েই— তৃতীয় শোণপাংশু। গুরু ! আমাদের আবার গুরু কোথায়! আমরা তো হলুম দাদাঠাকুরের দল। এ-পর্যস্ত আমরা তো কোনো গুরুকে মানি নি। প্রথম শোণপাংশু । সেইজন্যেই তো ও-জিনিসটা কী রকম দেখতে ইচ্ছা করে । দ্বিতীয় শোণপাংশু। আমাদের মধ্যে একজন, তার নাম চণ্ডক— তার কী জানি ভারি লোভ হয়েছে ; সে ভেবেছে তোমাদের কোনো গুরুর কাছে মন্ত্র নিয়ে আশ্চর্য কী-একটা ফল পাবে— তাই সে লুকিয়ে চলে গেছে। তৃতীয় শোণপাংশু । কিন্তু শোণপাংশু ব’লে কেউ তাকে মন্ত্র দিতে চায় না ; সেও ছাড়বার ছেলে নয়, সে লেগেই রয়েছে। তোমরা মন্ত্র দাও না বলেই মন্ত্র আদায় করবার জন্যে তার এত জেদ । প্রথম শোণপাংশু। কিন্তু পঞ্চকদাদা, আমাদের ছুলে কি তোমার গুরু রাগ করবেন ? পঞ্চক । বলতে পারি নে— কী জানি যদি অপরাধ নেন। ওরে, তোরা যে সবাই সব রকম কাজই করিস— সেইটে যে বড়ো দোষ । তোর চাষ করিস তো ? প্রথম শোণপাংশু। চাষ করি বৈকি, খুব করি। পৃথিবীতে জন্মেছি পৃথিবীকে সেটা খুব ক’ষে বুঝিয়ে দিয়ে তবে ছাড়ি। গান আমরা চাষ করি আনন্দে । মাঠে মাঠে বেলা কাটে সকাল হতে সন্ধে । রৌদ্র ওঠে, বৃষ্টি পড়ে, বঁাশের বনে পাতা নড়ে, বাতাস ওঠে ভরে ভরে চষা মাটির গন্ধে । সবুজ প্রাণের গানের লেখা রেখায় রেখায় দেয় রে দেখা, মাতে রে কোন তরুণ কবি নৃত্যদোকুল ছন্দে । ধানের শিষে পুলক ছোটে, সকল ধরা হেসে ওঠে, অজ্ঞানেরই সোনার রোদে পূর্ণিমারই চন্দ্রে।