পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন H86 না তা জানিস ? মারলে চলে না, ঠেললে চলে না, দশটা হাতি জুড়ে দিলে চলে না, আর তুই বলিস কিনা চালালেই চলবে! তৃতীয় শোণপাংশু। আচ্ছ ভাই, কাজ কী । তুমি বনেই চলো, আমাদের সঙ্গে খেতে বসতে হবে না । পঞ্চক। খুব হবে রে খুব হবে। আজ খেতে বসবই, খাবই— আজ সকলের সঙ্গে বসেই খাব— আনন্দে আজ ক্রিয়াকল্পতরুর ডালে ডালে আগুন লাগিয়ে দেব— পুড়িয়ে সব ছাই করে ফেলব। দাদাঠাকুর, তুমি ওদের সঙ্গে খাবে না ? দাদাঠাকুর । আমি রোজই খাই । পঞ্চক। তবে তুমি আমাকে খেতে বলছ না কেন । দাদাঠাকুর । আমি কাউকে বলি নে ভাই, নিজে বসে যাই । পঞ্চক। না দাদা, আমার সঙ্গে অমন করলে চলবে না। আমাকে তুমি হুকুম করে, তা হলে আমি বেঁচে যাই। আমি নিজের সঙ্গে কেবলই তর্ক করে মরতে পারি নে। দাদাঠাকুর । অত সহজে তোমাকে বেঁচে যেতে দেব না পঞ্চক। যেদিন তোমার আপনার মধ্যে হুকুম উঠবে সেইদিন আমি হুকুম করব । w একদল শোণপাংশুর প্রবেশ দাদাঠাকুর। কী রে, এত ব্যস্ত হয়ে ছুটে এলি কেন ? প্রথম শোণপাংশু । চণ্ডককে মেরে ফেলেছে । দাদাঠাকুর। কে মেরেছে ? দ্বিতীয় শোণপাংশু । স্থবিরপত্তনের রাজা । পঞ্চক । আমাদের রাজা ? কেন, মারতে গেল কেন । দ্বিতীয় শোণপাংশু। স্থবিরক হয়ে ওঠবার জন্তে চওক বনের মধ্যে এক পোড়ো মন্দিরে তপস্যা করছিল। ওদের রাজা মন্থরগুপ্ত সেই খবর পেয়ে তাকে কেটে ফেলেছে। তৃতীয় শোণপাংশু। আগে ওদের দেশের প্রাচীর পয়ত্রিশ হাত উচু ছিল, এবার আশি হাত উচু করবার জন্তে লোক লাগিয়ে দিয়েছে, পাছে পৃথিবীর সব লোক লাফ দিয়ে গিয়ে হঠাৎ স্থবিরক হয়ে ওঠে। চতুর্থ শোণপাংশু। আমাদের দেশ থেকে দশজন শোণপাংশু ধরে নিয়ে গেছে, হয়তে ওদের কালঝণ্টি দেবীর কাছে বলি দেবে। দাদাঠাকুর। চলো তবে । প্রথম শোণপাংশু । কোথায় ।