পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন ৩৫৫ প্রথম জর্তক। আমরা শাস্ত্র জানি নে, আমরা নামগান করি । পঞ্চক। সে কী রকম ব্যাপার ? শোনা দেখি একট। দ্বিতীয় দৰ্ভক। ঠাকুর, সে তুমি শুনে হাসবে। পঞ্চক। আমিই তো ভাই এতদিন লোক হাসিয়ে আসছি— তোরা আমাকেও হাসাবি ! শুনেও মন খুশি হয়। আমি যে কী মূল্যের মানুষ সে তোরা খবর পাস নি বলে এখনো আমার হাসিকে ভয় করিস। কিছু ভাবিস নে— নিৰ্ভয়ে শুনিয়ে দে । প্রথম দৰ্ভক। আচ্ছ। ভাই আয় তবে— গান ধর । গান ও অকুলের কূল, ও অগতির গতি, ও অনাথের নাথ, ও পতিতের পতি । ও নয়নের আলো, ও রসনার মধু, ও রতনের হার, ও পরানের বঁধু! ও অপরূপ রূপ, ও মনোহর কথা, ও চরমের সুখ, ও মরমের ব্যথা ! ও ভিখারির ধন, ও অবোলার বোল— ও জনমের দোলা, ও মরণের কোল ! পঞ্চক। দে ভাই, আমার মন্ত্রতন্ত্র সব ভুলিয়ে দে, আমার বিদ্যাসাধ্যি সব কেড়ে নে, দে আমাকে তোদের ঐ গান শিখিয়ে দে । প্রথম দর্তক। অামাদের গান ? পঞ্চক। ই রে হ, ঐ অধমের গান, অক্ষমের কান্না । তোদের এই মূখের বিদ্যা এই কাঙালের সম্বল খুজেই তো আমার পড়াশুনা কিছু হল না, আমার ক্রিয়াকর্ম সমস্ত নিস্ফল হয়ে গেল ! ও ভাই, আর-একটা শোনা— অনেক দিনকার তৃষ্ণা অল্পে মেটে না । দর্ভকদলের গান আমরা তারেই জানি তারেই জানি সাথের সাথি । তারেই করি টানাটানি দিবারাতি । সঙ্গে তারি চরাই ধেনু, বাজাই বেণু, তারি লাগি বটের ছায়ায় আসন পাতি ।