পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৫৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী তারে হালের মাঝি করি চালাই তরী, ঝড়ের বেলায় ঢেউয়ের খেলায় মাতামাতি । সারাদিনের কাজ ফুরালে সন্ধ্যাকালে তাহারি পথ চেয়ে ঘরে জালাই বাতি। অাচার্যের প্রবেশ আচার্য। সার্থক হল আমার নির্বাসন। প্রথম দৰ্তক। বাবাঠাকুর, আমাদের সমস্ত পাড়া আজ ত্রাণ পেয়ে গেল। এতদিন তোমার চরণগুলো তো এখানে পড়ে নি। আচার্য। সে আমার অভাগ্য, সে আমারই অভাগ্য। (s দ্বিতীয় দর্তক। বাবা, তোমার স্নানের জল কাকে দিয়ে তোলাব। এখানে তো— আচার্য। বাবা, তোরাই তুলে আনবি । প্রথম দৰ্তক। আমরা তুলে আনব । সে কি হয় ! আচার্য । ই বাবা, তোদের তোলা জলে আজ আমার অভিষেক হবে । দ্বিতীয় দৰ্তক। ওরে চল তবে ভাই, চল। আমাদের পাটল নদী থেকে জল আনি গে । [ প্রস্থান আচার্য। দেখো পঞ্চক, কাল এখানে এসে অামার ভারি গ্লানি বোধ হচ্ছিল । পঞ্চক । আমি তো কাল রাত্রে ঘরের বাইরে শুয়েই কাটিয়ে দিয়েছি । আচার্য। যখন এই রকম অত্যন্ত কুষ্ঠিত হয়ে আপনাকে আদ্যোপাস্ত পাপলিপ্ত মনে করে বসে আছি এমন সময় ওরা সন্ধ্যাবেলায় ওদের কাজ থেকে ফিরে এসে সকলে মিলে গান ধরলে— পারের কাণ্ডারী গো, এবার ঘাট কি দেখা যায় ? নামবে কি সব বোঝা এবার, ঘুচবে কি সব দায় ? শুনতে শুনতে মনে হল আমার যেন একটা পাথরের দেহ গলে গেল। দিনের পর দিন কী ভার বয়েই বেড়িয়েছি! কিন্তু কতই সহজ সরল প্রাণ নিয়ে সেই পারের কাণ্ডারীর খেয়ায় চড়ে বসা ! পঞ্চক । আমি দেখছি দৰ্ভক জাতের একটা গুণ– ওরা একেবারে স্পষ্ট করে নাম নিতে জানে। আর তট তট তোতয় তোতয় করতে করতে আমার জিবের এমনি