পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন \రిN9) মহাপঞ্চক। এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। শিলা জলে ভালে ! ম্লেচ্ছর অচলায়তনের প্রাচীর ফুটাে করে দেবে! পাগল হয়েছ । সঞ্জীব । কে যে বললে দেখে এসেছে । মহাপঞ্চক। সে স্বপ্ন দেখেছে। জয়োত্তম। আজই তো আমাদের গুরুর আসবার কথা । মহাপঞ্চক। তার জন্যে সমস্ত আয়োজন ঠিক হয়ে গেছে ; কেবল যে ছেলের মা-বাপ ভাই-বোন কেউ মরে নি এমন নবম গর্ভের সস্তান এখনো জুটিয়ে আনতে পারলে না— দ্বারে দাড়িয়ে কে যে মহারক্ষা পড়বে ঠিক করতে পারছি নে। সঙ্গীব। গুরু এলে তাকে চিনে নেবে কে। আচার্য অদীনপুণ্য তাকে জানতেন। আমরা তো কেউ তাকে দেখি নি । মহাপঞ্চক । আমাদের আয়তনে যে শাক বাজায় সেই বৃদ্ধ তাকে দেখেছে। আমাদের পূজার ফুল যে জোগায় সেও তাকে জানে। বিশ্বম্ভর। ঐ-যে উপাধ্যায় ব্যস্ত হয়ে ছুটে আসছেন। মহাপঞ্চক। নিশ্চয় গুরু আসবার সংবাদ পেয়েছেন । কিন্তু মহার্যক্ষ-পাঠের কী করা যায় ! ঠিক লক্ষণসম্পন্ন ছেলে তো পাওয়া গেল না। উপাধ্যায়ের প্রবেশ মহাপঞ্চক। কতদূর ? উপাধ্যায়। কতদূর কী ! এসে পড়েছে যে ! মহাপঞ্চক । কই দ্বারে তো এখনো শাক বাজালে না । উপাধ্যায়। বিশেষ দরকার দেখি নে— কারণ দ্বারের চিহ্নও দেখতে পাচ্ছি নে— ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। মহাপঞ্চক । বল কী ! দ্বার ভেঙেছে ? উপাধ্যায়। শুধু দ্বার নয়, প্রাচীরগুলোকে এমনি সমান করে শুইয়ে দিয়েছে যে তাদের সম্বন্ধে আর কোনো চিন্তা করবার নেই। মহাপঞ্চক। কিন্তু আমাদের দৈবজ্ঞ যে গণনা করে স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়ে গেল যে— উপাধ্যায়। তার চেয়ে ঢের স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে শত্রুসৈন্যদের রক্তবর্ণ টুপিগুলো । ছাত্রগণ। কী সর্বনাশ ! সঞ্জীব। কিসের মন্ত্র তোমার মহাপঞ্চক ! তৃণাঞ্চন। আমি তো তখনই বলেছিলুম এ-সব কাজ এই কাচাবয়সের পুথিপড়া অকালপক্কদের দিয়ে হবার নয়। •,