পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やケミ রবীন্দ্র-রচনাবলী কী করতে হবে সেইটে বলে দিন । কিন্তু আপনার ব্যবস্থা বড়ো কঠোর। রোগের সমস্ত দুঃখ ও-বেচার চুপ করে সহ করে— কিন্তু আপনার ওষুধ খাবার সময় ওর কষ্ট দেখে আমার বুক ফেটে যায়। কবিরাজ । সেই কষ্ট যত প্রবল তার ফলও তত বেশি– তাই তো মহৰ্ষি চ্যবন বলেছেন, ভেষজং হিতবাক্যঞ্চ তিক্তং আশুফলপ্রদং । আজ তবে উঠি দত্তমশায় ! [ প্রস্থান ঠাকুরদার প্রবেশ মাধব দত্ত। ঐ রে ঠাকুরদা এসেছে । সর্বনাশ করলে ! ঠাকুরদা। কেন ? অামাকে তোমার ভয় কিসের ? মাধব দত্ত। তুমি যে ছেলে থেপাবার সদার । { ঠাকুরদা। তুমি তো ছেলেও নও, তোমার ঘরেও ছেলে নেই– তোমার খেপবার বয়সও গেছে— তোমার ভাবন কী । মাধব দত্ত। ঘরে ষে ছেলে একটি এনেছি। ঠাকুরদা। সে কিরকম ! মাধব দত্ত। আমার স্ত্রী যে পোষ্যপুত্র নেবার জন্তে ক্ষেপে উঠেছিল। ঠাকুরদা। সে তো অনেকদিন থেকে শুনছি, কিন্তু তুমি যে নিতে চাও না । মাধব দত্ত। জান তো ভাই, অনেক কষ্টে টাকা করেছি, কোথা থেকে পরের ছেলে এসে আমার বহু পরিশ্রমের ধন বিনা পরিশ্রমে ক্ষয় করতে থাকবে, সে কথা মনে করলেও আমার খারাপ লাগত। কিন্তু এই ছেলেটিকে আমার যে কিরকম লেগে গিয়েছে— ঠাকুরদা। তাই এর জন্তে টাকা যতই খরচ করছ, ততই মনে করছ, সে ধেন টাকার পরম ভাগ্য । মাধব দত্ত। আগে টাকা রোজগার করতুম, সে কেবল একটা নেশার মতে ছিল— না করে কোনোমতে থাকতে পারতুম না। কিন্তু এখন যা টাকা করছি, সবই ঐ ছেলে পাবে জেনে উপার্জনে ভারি একটা আনন্দ পাচ্ছি। ঠাকুরদা। বেশ, বেশ ভাই, ছেলেটি কোথায় পেলে বলে দেখি । মাধব দত্ত। আমার স্ত্রীর গ্রামসম্পর্কে ভাইপো । ছোটোবেলা থেকে বেচারার মা নেই। আবার সেদিন তার বাপও মারা গেছে । ঠাকুরদা । আহা ! তবে তো আমাকে তার দরকার অাছে।