পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\లివ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী অমল। আমার এই ঘরের সামনে দিয়েই ফিরো ভাই । ছেলেরা । তুমি বেরিয়ে এসো-না, খেলবে চলো । অমল। কবিরাজ আমাকে বেরিয়ে যেতে মানা করেছে। ছেলেরা। কবিরাজ ! কবিরাজের মান তুমি শোন বুঝি ! চল ভাই চল আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে । অমল । না ভাই, তোমরা আমার এই জানলার সামনে রাস্তায় দাড়িয়ে একটু খেলা করে।— আমি একটু দেখি । ছেলেরা। এখেনে কী নিয়ে খেলব ? অমল। এই যে আমার সব খেলনা পড়ে রয়েছে— এ-সব তোমরাই নাও ভাই— ঘরের ভিতরে একল খেলতে ভালো লাগে না— এ-সব ধুলোয় ছড়ানো পড়েই থাকে— এ আমার কোনো কাজে লাগে না । (). ছেলেরা। বা, বা, বা, কী চমৎকার খেলনা ! এ যে জাহাজ ! এ যে জটাইবুড়ি ! দেখছিস ভাই ? কেমন স্বন্দর সেপাই – এ-সব তুমি আমাদের দিয়ে দিলে ? তোমার কষ্ট হচ্ছে না ? অমল। না, কিছু কষ্ট হচ্ছে না, সব তোমাদের দিলুম। ছেলেরা । আর কিন্তু ফিরিয়ে দেব না। অমল । না, ফিরিয়ে দিতে হবে না। ছেলেরা। কেউ তো বকবে না ? অমল। কেউ না, কেউ না । কিন্তু রোজ সকালে তোমরা এই খেলনাগুলো নিয়ে আমার এই দরজার সামনে খানিকক্ষণ ধরে খেলো। আবার এগুলো যখন পুরোনো হয়ে যাবে আমি নতুন খেলনা আনিয়ে দেব। ছেলেরা। বেশ ভাই, আমরা রোজ এখানে খেলে যাব। ও ভাই, সেপাইগুলোকে এখানে সব সাজা— আমরা লড়াই-লড়াই খেলি । বন্দুক কোথায় পাই ? ঐ-যে একটা মস্ত শরকাঠি পড়ে আছে— ঐটেকে ভেঙে ভেঙে নিয়ে আমরা বন্দুক বানাই। কিন্তু ভাই তুমি যে ঘুমিয়ে পড়ছ! অমল। হা, আমার ভারি ঘুম পেয়ে আসছে। জানি নে কেন আমার থেকে থেকে ঘুম পায়। অনেকক্ষণ বসে আছি আমি, আর বসে থাকতে পারছি নে— আমার পিঠ ব্যথা করছে । * ছেলেরা। এখন যে সবে এক প্রহর বেলা— এখনই তোমার ঘুম পায় কেন ? ঐ শোনো এক প্রহরের ঘণ্টা বাজছে ।