পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

i * t w * | 1* r l s W I छ्हे বোন * I f 8 80 এই রুদ্ধ আশ্রতে কুহেলিকাচ্ছন্ন অভিমানটা ভিতরে ভিতরে শশাঙ্ককে আনন্দ দেয়। ভালোমাছুষটির মতো বলে, উমি, কথা কইবে না এ সত্যাগ্রহ রক্ষা করাই উচিত। কিন্তু দোহাই ধর্ম, খেলবে না এমন পণ তো ছিল না।’ তার পরে টেনিস-ব্যাট হাতে করে চলে আসে। খেলায় শশাঙ্ক জিতের কাছাকাছি এসে ইচ্ছে করেই হারে । নষ্ট সময়ের জন্তে আবার পরের দিন সকালে উঠেই অনুতাপ করতে থাকে। কোনো-একটা ছুটির দিনে বিকালবেলায় শশাঙ্ক যখন ডান হাতে লাল-নীল পেন্সিল নিয়ে বঁ। আঙুলগুলো দিয়ে অকারণে চুল উসকোখুসকো করতে করতে আপিসের ডেন্ধে বসে কোনো-একটা দুঃসাধ্য কাজের উপর ঝুকে পড়েছে, উমি এসে বলে, “তোমার সেই দালালের সঙ্গে ঠিক করেছি আজ আমাকে পরেশনাথের মন্দির দেখাতে নিয়ে যাবে। চলে আমার সঙ্গে। লক্ষ্মীটি ।” শশাঙ্ক মিনতি করে বলে, “না ভাই, আজ না, এখন আমার ওঠবার জো নেই।” কাজের গুরুত্বে উমি একটুও ভয় পায় না। বলে, “অবলা রমণীকে অরক্ষিত অবস্থায় সবুজ-পাগড়ি-ধারীর হাতে সমর্পণ করে দিতে সংকোচ নেই, এই বুঝি তোমার শিভলরি ” শেষকালে ওর টানাটানিতে শশাঙ্ক কাজ ফেলে যায় মোটর হাকিয়ে । এই-রকম উৎপাত চলছে টের পেলে শৰ্মিলা বিষম বিরক্ত হয়। কেননা, ওর মতে পুরুষের সাধনার ক্ষেত্রে মেয়েদের অনধিকার প্রবেশ কোনোমতেই মার্জনীয় নয়। উর্মিকে শৰ্মিল। বরাবর ছেলেমানুষ বলেই জেনেছে । আজও সেই ধারণাটা ওর মনে আছে। তা হোক, তাই বলে আপিস-ম্বর তো ছেলেখেলার জায়গা নয়। তাই, উৰ্মিকে ডেকে ষথেষ্ট কঠিনভাবেই তিরস্কার করে। সে তিরস্কারের নিশ্চিত ফল হতে পারত, কিন্তু স্ত্রীর ক্রুদ্ধ কণ্ঠস্বর শুনে শশাঙ্ক স্বয়ং দরজার বাইরে এসে দাড়িয়ে উৰ্মিকে আশ্বাস দিয়ে চোখ টিপতে থাকে। তাসের প্যাক দেখিয়ে ইশারা করে, ভাবখান। এই যে, "চলে এসো, আপিস-ঘরে বসে তোমাকে পোকার খেলা শেখাব ।’ এখন খেলার সময় একেবারেই নয়, এবং খেলবার কথা মনে আনবারও সময় ও অভিপ্রায় ওর ছিল না। কিন্তু দিদির কঠোর ভর্ৎসনায় উর্মির মনে বেদনা লাগছে, এটা তাকে যেন উমির চেয়েও বেশি বাজে। ও নিজেই তাকে অকুনয়, এমন-কি, ঈষৎ তিরস্কার করে কাজের ক্ষেত্র থেকে সরিয়ে রাখতে পারত, কিন্তু শৰ্মিলা যে এই নিয়ে উৰ্মিকে শাসন করবে এইটে সহ করা ওর পক্ষে বড়ো কঠিন । শমিল শশাঙ্ককে ডেকে বলে, “তুমি ওর সব আবদার এমন করে শুনলে চলবে কেন। সময় নেই, অসময় নেই, তোমার কাজের লোকসান হয় ষে।”