পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন SINOA প্ৰান্তিক S বিশ্বের আলোকালুপ্ত তিমিরের অন্তরালে এল মৃত্যুদৃত চুপে চুপে ; জীবনের দিগন্ত-আকাশে যত ছিল সূক্ষ্ম ধূলি স্তরে স্তরে, দিল ধৌত করি ব্যথার দ্রাবক রসে, দারুণ স্বপ্নের তলে তলে চলেছিল পলে পলে দৃঢ়হন্তে নিঃশব্দে মার্জনা । কোন ক্ষণে নাটলীলা-বিধাতার নবনাট্যভূমে উঠে গেল যবনিকা। শূন্য হতে জ্যোতির তর্জনী সম্পর্শ দিল এক প্রান্তে স্তন্তিত বিপুল অন্ধকারে, ছুটিল বিদ্যুৎবেগে অসীম তন্দ্রর ভূপে ত্বপে— দীর্ণ দীর্ণ করি দিল তারে । গ্ৰীষ্মরিক্ত অবলুপ্ত নদীপথে অকস্মাৎ প্লাবনের দুরন্ত ধারায় বন্যার প্রথম নৃত্য শুকতার বক্ষে বিসপিয়া ধায় যথা শাখায় শাখায় সেইমত জাগরণ শূন্য আঁধারের গৃঢ় নাড়ীতে নাভীতে- অন্তঃশীলা জ্যোতিধারা দিল প্রবাহিয়া । আলোকে আঁধারে মিলি চিত্তাকাশে অর্ধস্মৃটি অস্পষ্ট্রের রচিল বিভ্ৰম । অবশেষে দ্বন্দ্ব গেল ঘুচি । পুরাতন সম্মোহের স্কুল কার্যপ্রাচীরবেষ্টন, মুহুর্তেই মিলাইল কুহেলিকা। নূতন প্ৰাণের সৃষ্টি হল অবারিত স্বচ্ছ শুভ্ৰ চৈতন্যের প্রথম প্ৰত্যুষ-অভ্যুদয়ে । অতীতের সঞ্চয়পুজিত দেহখানা, ছিল যাহা আসল্পের বক্ষ হতে ভাবিয্যের দিকে মাথা তুলি বিন্ধ্যগিরিব্যবধানসম, আজ দেখিলাম প্ৰভাতের অবসর মেঘ তাহ, স্ৰন্ত হয়ে পড়ে দিগন্তবিচ্যুত । বন্ধমুক্ত আপনারে লভিলাম সুদূর অন্তরাকাশে, ছায়াপথ পার হয়ে গিয়ে আলোক আলোকতীর্থে সূক্ষ্মতম বিলয়ের তটে ।