পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Swo রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী যাবার মুখে যাক এ জীবন, যাক নিয়ে যাহা টুটে যায়, যাহা ছুটে যায়, যাহা মৃত্যুই যার অন্তরে, যাহা রেখে যায়। শুধু ফাক । যাক এ জীবন পূজিত তার জাজাল নিয়ে যাক । টুকরো যা থাকে ভাঙা পেয়ালার, ফুটো সেতারের সুরাহারা তার, শিখা-নিবে-যাওয়া বাতি, স্বল্পপ্রশেষের ক্লান্তি-বোকাই রাতি নিয়ে যাক যত দিনে-দিনে-জমা-করা Sayer-vets নিৰ্ম্মফলতার সযত্ন সঞ্চয় । ভাটার স্রোতের শেষ-খেয়া-দেওয়া তরী । নিঃশেষ যবে হয় যত কিছু ফাকি তবুও যা রায় বাকি জগতের সেই সকল-কিছুর অবশেষোতেই কাটায়েছি। কাল যত অকাজের বেলায় । মন-ভোলাবার অকারণ গানে কাজ ভোলাবার খেলায় । সেখানে যাহারা এসেছিল মোর পাশে তারা কেহ নয়, তারা কিছু নয় মানুষের ইতিহাসে । শুধু অসীমের ইশারা তাহারা এনেছে আঁখির কোণে, অমরাবতীর নৃত্যনুপুর বাজিয়ে গিয়েছে মনে । দখিন হাওয়ার পথ দিয়ে তারা উকি মেরে গেছে দ্বারে, কোনো কথা দিয়ে তাদের কথা যে বুঝাতে পারি নি। কারে । রাজা মহারাজা মিলায় শূন্যে ধুলার নিশান তুলে, তারা দেখা দিয়ে চলে যায় যাবে ফুটে ওঠে ফুলে ফুলে । থাকে নাই থাকে কিছুতেই নেই ভয়, যাওয়ায় আসায় দিয়ে যায় ওরা নিত্যের পরিচয় । অজানা পথের নামহারা ওরা লাজা দিয়েছে মোরে হাটে বাটে যাবে ফিরেছি। কেবল নামের বেসাতি করে । আমার দুয়ারে আঙিনার ধারে ওই চামেলির লতা কোনো দুদিনে করে নাই কৃপণতা ।