পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR S Co রবীন্দ্র-রচনাবলী তোমার সুরে ভরিয়ে নিয়ে চিত্ত যাব যেথায় বেসুর বাজে নিত্য । কোলাহলের বেগে ঘূর্ণি উঠে জেগে, নিয়ো তুমি আমার বীণার সেইখানেই পরীক্ষা । ও দিকে আধুনিক আমলের বারোয়ারির দল বলছে, উৎসবে নতুন কিছু চাই। কোণা-কাটা ত্যাড়াবাকা দুমদাম-করা কড়া-ফ্যাশানের আহেলা বেলাতি নতুনকে না হলে তাদের শুকনো মেজাজে জোর পীেচচ্ছে না। কিন্তু, র্যাদের রসবেদনা আছে তারা কানে কানে বলে গেলেন, আমরা নতুন চাই নে, আমরা চাই নবীনকে । এঁরা বলেন, মাধবী বছরে বছরে বাকা করে খোচা মেরে সাজ বদলায় না, অশোক পলাশ একই পুরাতন রঙে নিঃসংকোচে বারে বারে রঙিন। চিরপুরাতনী ধরণী, চিরপুরাতন নবীনের দিকে তাকিয়ে বলছে, “লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখানু, তবু হিয়া জুড়ন না গেল !!' সেই নিত্যনন্দিত সহজশোভন নবীনের উদ্দেশে তোমাদের আত্মনিবেদনের গান শুরু করে দাও । আন গো তোরা কার কী আছে, দেবার হাওয়া বইল দিকে দিগন্তরে এই সুসময় ফুরায় পাছে । কুজীবনের অজলি যে ছাপিয়ে পড়ে, পলাশকানন ধৈৰ্য হারায় রঙের বড়ে, বেণুর শাখা তালে মাতাল পাতার নাচে । প্ৰজাপতি রঙ ভাসালো নীলাম্বরে, মীেমাছিরা ধ্বনি উড়ায় বাতাস-’পরে । দখিন হাওয়া হেঁকে বেড়ায় ‘জাগো জাগো, দোয়েল কোয়েল গানের বিরাম জানে না গো, eu erroviso II আজ বরবর্শিনী অশোকমঞ্জরী তার চেলাঞ্চল-আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গে আকাশে রক্তরঙের কিঙ্কিণীঝংকার বিকীর্ণ করে দিলে ; কুজীবনের শিয়ীষবীথিকায় আজ সীেয়ভের অপরিমেয় দাক্ষিণ্য । ললিতিকা, আমরাও তো শূন্য হাতে আসি নি। মাধুর্বের অতল সমুদ্র আজ দানের জোয়ার লেগেছে, আমরাও ঘাটে ঘাটে দানের বোঝাই তরীর রশি খসিয়ে দিয়েছি। যে নাচের তরঙ্গে তারা ভেসে পড়ল সেই নাচের হিন্দটা, কিশোর, দেখিয়ে দাও ।