পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NR NR NR রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী তার শুভ্ৰ মেঘের বসনপ্রান্ত আকাশে এলিয়ে পড়ছে। আজি ঘুমভাঙা রাতের বাঁশিতে বেহাগের তান নিবিড় আমা-তিমির হতে দোল লেগেছে এবার। পাওয়া আর না-পাওয়ার মাঝখানে দোেল। এক প্রান্তে বিরহ, আর প্রান্তে মিলন, স্পর্শ করে করে দুলছে বিশ্বের হৃদয় । পরিপূর্ণ আর অপূর্ণের মাঝখানে এই দোলন । আলোতে ছায়াতে ঠেকতে ঠেকতে রূপ জাগছে- জীবন থেকে মরণে, মরণ থেকে জীবনে, অন্তর থেকে বাহিরে, আবার বাহির থেকে অন্তরে । এই দোলার তালে না মিলিয়ে চললেই রাসভঙ্গ হয় । ও পাড়ার ওরা-যে দরজার আগল ঐটে বসেই রইল- হিসেবের খাতার উপর ঝুঁকে পড়েছে। একবার ওদের দরজার বাইরে দাড়িয়ে দোলের ডাক দাও । ওরে গৃহবাসী, তোরা খোল দ্বার খোল কিন্তু পূর্ণিমার চাদ-যে ধ্যানন্তিমিতলোচন পুরোহিতের মতো আকাশের বেদীতে বসে উৎসবের মন্ত্র জপ করতে লাগল। ওকে দেখাচ্ছে যেন জ্যোৎস্নাসমুদ্রের ঢেউয়ের চূড়ায় ফেনীপুজের মতো- কিন্তু সে ঢেউ-যে চিত্ৰাপিতবৎ স্তব্ধ । এ দিকে আজ বিশ্বের বিচলিত চিত্ত দক্ষিণের হাওয়ায় ভেসে পড়েছে, চঞ্চলের দল মেতেছে বনের শাখায়, পাখির ডানায়- আর ঐ কি এক অবিচলিত হয়ে থাকবে নিবাতনিষ্কম্পমিবপ্ৰদীপম ? নিজে মাতবে না। আর বিশ্বকে মাতাবে, সে কেমন হল ? এর একটা যা-হয় , खदाय प्रेिश या9 | কে দেবে চাদ তোমায় দোলা’ আজি সব ভীরুদের ভয় ভাঙানো চাই । ঐ মাধবীর দ্বিধা-যে ঘোচে না । এ দিকে আকাশে আকাশে প্ৰগলভ্যতা অথচ ওরা রইল সসংকোচে ছায়ার আড়ালে। ঐ অবগুষ্ঠিতাদের সাহস দাও । বেরিয়ে পড়বার হাওয়া বইল যে— বকুলগুলো রাশি রাশি করতে করতে বলছে যা হয় তা হোক গে, আমের মুকুল নিৰ্ভয়ে বলে উঠছে দিয়ে ফেলব। একেবারে শেষ পর্যন্ত । যে পথিক আপনাকে বিলিয়ে দেবার জন্যেই পথে বেরিয়েছে তার কাছে আত্মনিবেদনের থালি উপুড় করে দিয়ে তবে তাকে আনতে পারবে নিজের আঙিনায় । কৃপণতা করে সময় বইয়ে দিলে তো চলবে না । হে মাধবী, দ্বিধা কেন, আসিবে কি ফিরিবে কি দেখতে দেখতে ভরসা বেড়ে উঠছে, তাকে পাব না তো কী । যখন দেখা দেয় না। তখনো যে সাড়া দেয় । যে পথে চলে সেখানে-যে তার চলার রঙ লাগে । যে আড়ালে থাকে তার ফাক দিয়ে আসে তার মালার গন্ধ । দুয়ারে অন্ধকার যদি-বা চুপচাপ থাকে, আঙিনায় হাওয়াতে চলে কানাকানি । পড়তে পারি। নে সব অক্ষর, কিন্তু চিঠিখানা মনের ঠিকানায় এসে পৌছয় । লুকিয়েই ও ধরা দেবে এমনিতরো ওর ভাবখানা । সে কি ভাবে গোপন রবে লুকিয়ে হৃদয়-কাড়া’ এইবার বেড়া ভাঙল, দুর্বর বেগে । অন্ধকারের গুহায় অগোচরে জমে উঠেছিল বন্যার উপক্ৰমণিকা, হঠাৎ ঝর্না ছুটে বেরোল, পাথর গেল ভেঙে, বাধা গেল ভেসে। চরম যখন আসেন তখন এক-পা এক-পা পথ শুনে গুনে আসেন না। একেবারে বজে-শােন-দেওয়া বিদ্যুতের মতো, পুঞ্জ পুত্র কালো মেঘের ব্যক্ষ এক আঘাতে বিদীর্ণ করে আসেন । হৃদয় আমার, ওই বুঝি তোর ফাল্গুনী ঢেউ আসে, বেড়া-ভাতার মতন নামে উদাম উল্লাসে । CONS ONN gr (Mr Gr, এল তোমার সাধনধন উদার আশ্বাসে ।