পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6圏ぐ5暖 Š98 ዓ খাতা-হাতে অমল চারুকে সহসা চকিত করিয়া দিবার জন্য পশ্চাৎ হইতে নিঃশব্দপদে প্রবেশ করিল। কাছে আসিয়া দেখিল, বিশ্ববন্ধুর সমালোচনা খুলিয়া চারু নিমগ্নচিত্তে বসিয়া আছে। পুনরায় নিঃশব্দপদে অমল বাহির হইয়া গেল। ‘আমাকে গালি দিয়া চারুর লেখাকে প্রশংসা করিয়াছে বলিয়া আনন্দে চারুর আর চৈতন্য নাই।” মুহুর্তের মধ্যে তাহার সমন্ত চিত্ত যেন তিক্তস্বাদ হইয়া উঠিল । চারু যে মুখের সমালোচনা পড়িয়া নিজেকে আপন গুরুর চেয়ে মন্ত মনে করিয়াছে, ইহা নিশ্চয় স্থির করিয়া অমল চারুর উপর ভারি রাগ করিল। চারুর উচিত ছিল কাগজখানা টুকরা টুকরা করিয়া ছিডিয়া আগুনে ছাই করিয়া পুড়াইয়া ফেলা । চারুর উপর রাগ করিয়া অমল মন্দার ঘরের দ্বারে দাডাইয়া সশব্দে ডাকিল, “মন্দা-বউঠান ।” মন্দা । এসো ভাই, এসো। না চাইতেই যে দেখা পেলুম । আজ আমার কী ভাগ্যি । অমল । আমার নূতন লেখা দু-একটা শুনবে ? মন্দা । কতদিন থেকে “শোনাব শোনাব’ করে আশা দিয়ে রেখেছি কিন্তু শোনাও না তো । কাজ নেই ভাই— আবার কে কোন দিক থেকে রাগ করে বসলে তুমিই বিপদে পড়বে— আমার কী । অমল কিছু তীব্রস্বরে কহিল, “রাগ করবেন কে । কেনই বা রাগ করবেন । আচ্ছা সে দেখা যাবে, তুমি এখন শোনোই তো ।” মন্দা যেন অতান্ত আগ্রহে তাড়াতাড়ি সংযত হইয়া বসিল । অমল সুর করিয়া সমারোহের সহিত অমলের লেখা মন্দার পক্ষে নিতান্তই বিদেশী, তাহার মধ্যে কোথাও সে কোনো কিনারা দেখিতে পায় না । সেইজন্যেই সমস্ত মুখে আনন্দের হাসি আনিয়া অতিরিক্ত ব্যগ্রতার ভাবে সে শুনিতে লাগিল । উৎসাহে অমলের কণ্ঠ উত্তরোত্তর উচ্চ হইয়া উঠিল । সে পডিতেছিল— ‘অভিমন্য যেমন গর্ভবাসকালে কেবল বাহ-প্ৰবেশ করিতে শিখিয়াছিল, ব্যুহ হইতে নিৰ্গমন শেখে নাই- নদীর স্রোত সেইরূপ গিবিন্দরীর পাষাণ-জঠরের মধ্যে থাকিয়া কেবল সম্মুখেই চলিতে শিখিয়াছিল, পশ্চাতে ফিবিতে শেখে নাই । হায় নদীর স্রোত, হায় যৌবন, হায় কাল, হায় সংসাব, তোমরা কেবল সম্মুখেই চলিতে পাের— যে পথে স্মৃতির স্বর্ণমণ্ডিত উপলখণ্ড ছড়াইয়া আস সে পথে আর কোনোদিন ফিরিয়া যাও না । মানুষের মনই কেবল পশ্চাতের দিকে চায়, অনন্ত ক্তগৎ-সংসাব সে দিকে ফিরিয়াও তাকায় না ।” এমন সময় মন্দার দ্বারের কাছে একটি ছায়া পডিল, সে ছায়া মন্দা দেখিতে পাইল । কিন্তু যেন দেখে নাই একপ ভান কবিয়া অনিমেষদৃষ্টিতে অমলের মুখের দিকে চাহিয়া নিবিড় মনোযোগের সহিত পড়া শুনিতে লাগিল । ছাযা তৎক্ষণাৎ সরিয়া গেল । চারু অপেক্ষা করিয়া ছিল, অমল আসিলেই তাহার সম্মুখে বিশ্ববন্ধু কাগজটিকে যথোচিত লাঞ্ছিত করিবে, এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া তাহদের লেখা মাসিক পত্রে বাহির করিয়াছে বলিয়া অমলকেও ভৎসনা করিবে । অমলেব আসিবার সময় উত্তীৰ্ণ হইয়া গেল তবু তাহার দেখা নাই ! চারু একটা লেখা ঠিক করিয়া পাখিয়াছে , অমলকে শুনাইবার ইচ্ছা ; তাহাও পডিয়া আছে । এমন সময়ে কোথা হইতে অমলের কণ্ঠস্বর শুনা যায় । এ যেন মন্দার ঘরে । শরবিন্ধের মতো সে উঠিয়া পড়িল । পায়ের শব্দ না করিয়া সে দ্বারের কাছে আসিয়া দাড়াইল । অমল যে লেখা মন্দাকে শুনাইতেছে এখনো চারু, তাহা শোনে নাই । অমল পড়িতেছিল- “মানুষের মনই কেবল পশ্চাতের DBD DS DBDD EYDSBBB D BD D DBBDD DDSS চারু যেমন নিঃশব্দে আসিয়াছিল। তেমন নিঃশব্দে আর ফিরিয়া যাইতে পারিল না । আজ পরে পরে দুই-তিনটা আঘাতে তাহাকে একেবারে ধৈর্যচ্যুত করিয়া দিল । মন্দা যে একবৰ্ণও বুঝিতেছে না এবং অমল যে নিতান্ত নির্বোিধ মূঢ়ের মতো তাহাকে পিডিয়া শুনাইয়া তৃপ্তিলাভ করিতেছে, এ কথা তাহার