পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

steel 88S সুকুমারীর প্রবেশ বিষ্ণু । দিদি, সতীশকে রক্ষা করে। ও কোনদিন কী করে বসে আমি তো ভয়ে বঁচি নে। ও যা বলে শুনে আমার গা কাপে । সুকুমারী। ও আবার কী বলে । বিধু। বলে কিনা আফিম কিনে আনবে। সুকুমারী। কী সর্বনাশ ! সতীশ, আমার গা ছুঁয়ে বল এমন কথা মনেও আনবি নে। চুপ করে রইল যে । লক্ষ্মী বাপ আমার । তোর মা-মাসির কথা মনে করিাস । সতীশ । জেলে বসে মনে করার চেয়ে এ-সমস্ত হাস্যকর ব্যাপার জেলের বাইরে চুকিয়ে ফেলাই उठ(नीं । সুকুমারী । আমরা থাকতে তোকে জেলে কে নিয়ে যাবে। she পেয়াদা । সুকুমারী । আচ্ছা, সে দেখব। কতবড়ো পেয়াদা ; ওগো, এই টাকাটা ফেলে দাওনা, ছেলেমানুষকে কেন কষ্ট দেওয়া । শশধর । টাকা ফেলে দিতে পারি, কিন্তু মন্মথ আমার মাথায় ইট ফেলে না মারে । সতীশ । মেসোেমশায়, সে ইট তোমার মাথায় পৌছবে না, আমার ঘাড়ে পড়বে। একে একজামিনে ফেল করেছি, তার উপরে দেন, এর উপরে জেলে যাবার এতবড়ো সুযোগটা যদি মাটি হয়ে যায়। তবে বাবা আমার সে অপরাধ মাপ করবেন না । বিধু ! সত্যিা দিদি, সতীশ মেসোর টাকা নিয়েছে শুনলে তিনি বোধ হয়। ওকে বাড়ি হতে বার করে (प्रादन्म । সুকুমারী । তা দিন-না। আর কি কোথাও বাড়ি নেই নাকি । ও বিধু, সতীশকে তুই আমাকেই দিয়ে দে-না । আমার তো ছেলেপূলে নেই, আমি নাহয় ওকেই মানুষ করি । কী বল গো । শশধর । সে তো ভালোই । কিন্তু সতীশ যে বাঘের বাচ্ছা, ওকে টানতে গেলে তার মুখ থেকে প্ৰাণ ধাচানো দায় হবে । সুকুমাবী । বাঘমশায় তো বাচ্ছাটিকে জেলের পেয়াদার হাতেই সমৰ্পণ করে দিয়েছেন, আমরা যদি তাকে বাচিয়ে নিয়ে যাই এখন তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না । শশধর । বাঘিনী কী বলেন, বাচ্ছাই বা কী বলে । সূকুমারী ! যা বলে সে আমি জানি, সে কথা আর জিজ্ঞাসা করতে হবে না। তুমি এখন দেনটা শোধ করে দাও । বিধু। দিদি । সুকুমারী। আর দিদি দিদি করে কাদতে হবে না। চল, তোর চুল বেঁধে দিই গে। এমন ছিরি করে তোর ভগ্নীপতির সামনে বার হতে লজা করে না ? শশধর ব্যতীত সকলের প্রস্থান । মন্মথর প্রবেশ শশধর । মন্মথ, ভাই, তুমি একটু বিবেচনা করে দেখো— মন্মথ । বিবেচনা না করে তো আমি কিছুই করি না। শশধর । তবে দোহাই তোমার, বিবেচনা একটু খাটাে করো। ছেলেটাকে কি জেলে দেবে। তাতে fs es VESTIGM RGK মন্মথ। ভালোমন্দর কথা কেউই শেষ পর্যন্ত ভেবে উঠতে পারে না। আমি মোটামুটি এই বুঝি যে, বার বার সাবধান করে দেওয়ার পরও যদি কেউ অন্যায় করে তবে তার ফলভোগ হতে তাকে কৃত্রিম উপায়ে রক্ষা করা কারও উচিত হয় না। আমরা যদি মাঝে পড়ে ব্যৰ্থ করে না দিতেম। তবে প্রকৃতির কঠিন শিক্ষায় মানুষ যথার্থ মানুষ হয়ে উঠতে পারত।