পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*Ov 88. ওকে তুমি দুটি চক্ষে দেখতে পার না, তা আমি বেশ বুঝেছি। আমি বরাবর তোমার ছেলেকে পেটের ছেলের মতো মানুষ করলেম, আর তুমি বুঝি আজ তারই শোধ নিতে এসেছ । বিধু। (সরোদনে) দিদি, এমন কথা বোলো না । আমার কাছে আমার সতীশ আর তোমার হারেনে প্ৰভেদ কী আছে । G3N I AN, WIWIT TANTIGK GG3 || বিষ্ণু। ছি ছি খােকা, মিথ্যা বলতে নেই। দাদা তাের এখানে ছিলইনা তা মারবে কী করে। হরেন । বাঃ, দাদা যে এইখানে বসে চিঠি লিখছিল- তাতে ছিল ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকার সয়ে আকার, ভালোবাসা । মা, তুমি আমার জন্যে দাদাকে লজঞ্জস আনতে বলেছিলে, দাদা সেই টাকায় ফুলের তোড়া কিনে এনেছে- তাতেই আমি একটু হাত দিয়েছিলেম বলেই আমনি TONANGK5 GANGKA সুকুমারী । তোমরা মায়ে পোয়ে মিলে আমার ছেলের সঙ্গে লেগেছ বুঝি । ওকে তোমাদের সহ্য হচ্ছে না । ও গেলেই তোমরা বাচ । আমি তাই বলি, খোকা রোজ ডাক্তার-কবিরাজের বোতল বোতল ওষুধ গিলছে, তবু দিন দিন এমন রোগা হচ্ছে কেন । ব্যাপারখানা আজ বোঝা গেল । চতুৰ্দশ পরিচ্ছেদ সতীশ । আমি তোমার কাছে বিদায় নিতে এসেছি, নেলি । নলিনী । কেন, কোথায় যাবে । সতীশ । জাহান্নামে । নলিনী । সে জায়গায় যাবার জন্য কি বিদায় নেবার দরকার হয় । যে লোক সন্ধান জানে সে তো ঘরে বসেই সেখানে যেতে পারে । আজ তোমার মেজাজটা এমন কেন । কলারটা বুঝি ঠিক হাল ফেশানের হয় নি । সতীশ । তুমি কি মনে কর আমি কেবল কলারের কথাই দিনরাত্রি চিন্তা করি । নলিনী । তাই তো মনে হয় । সেইজন্যই তো হঠাৎ তোমাকে অত্যন্ত চিন্তাশীলের মতো দেখায় । সতীশ । ঠাটা কোরো না নেলি, তুমি যদি আজ আমার হৃদয়টা দেখতে পেতেনলিনী । তা হলে ডুমুরের ফুল এবং সাপের পাচ পাও দেখতে পেতাম । সতীশ । আবার ঠাট্টা ! তুমি বড়ো নিষ্ঠুর । সত্যই বলছি নেলি, আজ বিদায় নিতে এসেছি। নলিনী । দোকানে যেতে হবে ? সতীশ । মিনতি করছি নেলি, ঠাট্টা করে আমাকে দগ্ধ কোরো না । আজ আমি চিরদিনের মতো বিদায় নেব । নলিনী । কেন, হঠাৎ সেজন্য তোমার এত বেশি আগ্রহ কেন । সতীশ । সত্য কথা বলি, আমি যে কত দরিদ্র তা তুমি জান না । নলিনী । সেজন্য তোমার ভয় কিসের । আমি তো তোমার কাছে টাকা ধার চাই নি । সতীশ । তোমার সঙ্গে আমার বিবাহের সম্বন্ধ হয়েছিলনলিনী । তাই পালাবে ? বিবাহ না হতেই হৎকম্প । সতীশ । আমার অবস্থা জানতে পেরে মিস্টার ভাদুড়ি আমাদের সম্বন্ধ ভেঙে দিলেন । নলিনী । অমনি সেই অপমানেই কি নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে হবে । এতবড়ো অভিমানী লোকের কারও সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ রাখা শোভা পায় না। সাধে আমি তোমার মুখে ভালোবাসার কথা শুনলেই ঠাট্টা করে উড়িয়ে দি । সতীশ । নেলি, তবে কি এখনো আমাকে আশা রাখতে বল ।