পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ሉፃ S সুন্দর হতেই হবে ; আকৌশল ধরা পড়ে কুশ্ৰীতায়, কর্মের ও লোক-ব্যবহারের ছন্দোেভঙ্গে। ভাঙা ছন্দের ছিদ্র দিয়েই লক্ষ্মী বিদায় নেন । এতক্ষণ ছন্দকে দেখা গেল নৃত্যে । কেননা ছন্দের প্রথম উল্লাস মানুষের বাক্যহীন দেহই । তার পরে দেহের ইশারা মেলে ভাষার ইশারায় । এবার ভাষার ক্ষেত্রে দেখা যাক ছন্দকে । সেই একই কথা, ভার আর গতি, সেই দুইয়ের যোগে ওজন বাঁচিয়ে চলা । জন্তুর আওয়াজের পরিধি কতটুকুই বা ; তাতে জোর থাকতে পারে। কিন্তু ভার সামান্য । কুকুর যতই ডাকুক, শেয়াল যতই চেচাক, ধ্বনির ওজন বাঁচিয়ে চলবার সমস্যা তাদের নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু আভাস পাওয়া যায় । গাধার পরে অবিচার করতে চাই নে। সে শুধু পরের ময়লা কাপড় বহন করে তা নয়, এ-পর্যন্ত কণ্ঠস্বর সম্বন্ধে আপন প্ৰভূত অখ্যাতি বহন করে এসেছে। কিন্তু, যখনই সে নিজের ডাককে দীর্ঘায়িত করে, তখনই পর্যায়ে পর্যায়ে তাকে ধ্বনির ওজন ভাগ করতে হয় । নিজের ব্যবসায়ের প্রতি লক্ষ রেখে D BBBBB BDBDB DBB DuD DBSS DDDS DBD D DBB DDB DS মানুষকে বহন করতে হয় ভাষার সুদীর্ঘতা। প্ৰলম্বিত ভাষার ওজন তাকে রাখতেই হয়। মানুষের সেইবাক্যের সঙ্গে তার গানের সুর যখন মিশল, তখন গীতিকলা হল দীর্ঘািয়ত । নানাবিধ তাল নিযুক্ত হয়েছে তার ভার বইতে । কিন্তু, তাল অর্থাৎ ছন্দকে কেবল ভারবাহক বললে চলবে না । সে তো ধ্বনিভারের ঝাকামুটি নয়। ভারগুলিকে নানা আয়তনে বিভক্ত করে যেই যে তাকে গতি দেয়, অমনি রূপ নিয়ে সংগীত আমাদের চৈতন্যকে আঘাত করে । ভাষা অবলম্বন করে যখন আমরা খবর দিতে চাই তখন বিবরণের সত্যতা রক্ষা করাই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব ; কিন্তু যখন রূপ দিতে চাই তখন সত্যতার চেয়ে বেশি আবশ্যক হয় ছন্দের । 'একদা এক বাঘের গলায় হাড় ফুটিয়াছিল, এটা নিছক খবর । গল্প হিসাবে বা ঘটনা হিসাবে সত্য হলে এর আর কোনোই জবাবদিহি নেই। কিন্তু, গলায়-হাড়-বোধা জন্তুটার ল্যাজ যদি প্ৰত্যক্ষভাবে DBBB DBBE DBDDBD DBDL B BDD DB YBBD BDBDB DBDBD DD SS বিদ্যুৎ-লাঙ্গুল করি। ঘন তর্জন বজ্রবিদ্ধ মেঘ করে বারি বর্জন । তদ্রুপ যাতনায় অস্থির শার্দুল অস্থিবিদ্ধগলে করে ঘোর গর্জন । কাব্যসাহিত্য কেবল রসসাহিত্য নয়, তা রূপসাহিত্য । সাধারণত, ভাষায় শব্দগুলি অর্থবহন করে, কিন্তু ছন্দে তারা রূপগ্ৰহণ করে । । ছন্দ সম্বন্ধে এই গেল আমার সাধারণ বক্তব্য । বিশ্বের ভাষায় মানুষের ভাষায় রূপ দেওয়া তার কাজ। এখন বাংলা কাব্যছন্দ সম্বন্ধে বিশেষভাবে কিছু বলবার চেষ্টা করা যাক । ܔ প্ৰতোক ভাষার একটি স্বকীয় ধ্বনি-উদ্ভাবনা আছে । তার থেকে তার স্বরূপ চেনা যায় । ইংরেজিতে বেশির ভাগ শব্দে স্বরবর্ণের মধ্যস্থতা নেই বলে সে যেন হয়েছে সরদ যন্ত্রের মতো, আঙুলের আঘাতে তার ঐকমাত্রিক ধ্বনিগুলি উচ্চকিত, ইটালিয়ানে ছড়ির লম্বা টানে বেহালার টানা সুর । বাংলাভাষারও নিজের একটা বিশেষ ধ্বনিস্বরূপ আছে । তার ধবনির এই চেহারা হসন্তবর্ণের যোগে । যে বাংলা আমাদের মায়ের কণ্ঠীগত, জ্যেষ্ঠতাতের লেখনীগত নয়, ইংরেজির মতো তারও সুর ব্যঞ্জনবর্ণের সংঘাতে । আজ সাধুভাবার ছন্দে জোর দেবার অভিপ্ৰায়ে অভিধান ঘেটে যুক্তবর্ণের আয়োজনে লেগেছি, অথচ প্রাকৃতবাংলায় হসন্তের প্রাধান্য আছে বলেই যুক্তবর্ণের জোর তার মধ্যে আপনি এসে পড়ে। এই ভাষায় একটি শ্লোক রচনা করা যাক একটিও যুক্তবর্ণ না দিয়ে । N. N. G.