পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(bve Q-G (GG (GG উধাও হয়ে যায় দূরে, GQ R 9 CAN গোপন কোন সুরপুরেস্বপনে ওড়ে কোন দেশে উদাস মোর প্রাণ-পাখি । vivo Vige Vo ব্যাকুল হয়ে জাগে আঁখি । এও তো আর-এক ছন্দ । ইহার লয় পাচে চারে মিলিয়া, আবার এইটিকে উলটাইয়া দিয়া চারে পাচে করিলে নিয়ের ছন্দকে লইয়া নয়-ছয় করা যাইতে পারে । চোতাল তো বারো মাত্রার ছন্দ । কিন্তু, এই বারো মাত্রা রক্ষা করিলেও চোতালকে রক্ষা করা যায় না। এমন হয় । এই তো বারো মাত্রা বনের পথে পথে বাজিছে বায়ে নুপুর রুনুরুন্নু কাহার পায়ে । কাটিয়া যায় বেলা মনের ভুলে, বাতাস উদাসিছে আকুল চুলে, ভ্রমরমুখরিত বকুলছায়ে নূপুর রুনুরুনু কাহার পায়ে । ইহা চোতালও নহে, একতালাও নহে, ধামারও নয়, কঁপতালও নয় । লয়ের হিসাব দিলেও তালের হিসাব মেলে না । তালওয়ালা সেই গরমিল লইয়া কবিকে দায়িক করে । কিন্তু, হাল আমলে এ-সমন্ত উৎপাত চলিবে না । আমরা শাসন মানিব, তাই বলিয়া অত্যাচার মানিব না । কেননা, যে-নিয়ম সত্য সে-নিয়ম বাহিরের জিনিস নয়, তাহা বিশ্বের বলিয়াই তাহা আমার আপনার । যে-নিয়ম ওস্তাদের তাহা আমার ভিতরে নাই, বাহিরে আছে ; সুতরাং তাকে অভ্যাস করিয়া বা ভয় করিয়া বা দায়ে পড়িয়া মানিতে হয় । এইরূপ মানার দ্বারাই শক্তির বিকাশ বন্ধ হইয়া যায় । আমাদের সংগীতকে এই মােনা হইতে মুক্তি দিলে তবেই তার স্বভাব তার স্বরূপকে নব নব উদভাবনার ভিতর দিয়া ব্যক্ত করিতে থাকিবে । V S KON 8 সংস্কৃত-বাংলা ও প্রাকৃত-বাংলার ছন্দ সংস্কৃত-বাংলা এবং প্রাকৃত-বাংলার গতিভঙ্গিতে একটা লয়ের তফাত আছে। তার প্রকৃত কারণ প্ৰকৃত-বাংলার দেহতত্ত্বটা হসন্তের ছাচে, সংস্কৃত-বাংলার হলন্তের।’ অর্থাৎ উভয়ের ধ্বনিম্বভাবটা পরস্পরের উলটাে । প্রাকৃত-বাংলা স্বরবর্ণের মধ্যস্থতা থেকে মুক্ত হয়ে পদে পদে তার ব্যঞ্জনধ্বনিগুলোকে আঁট করে তোলে। সুতরাং তার ছন্দের বুনানি সমতল নয়, তা তরঙ্গিত । সোজা লাইনের সুতো ধরে বিশেষ কোনো প্ৰাকৃত-বাংলার ছন্দকে মাপলে হয়তো বিশেষ কোনো সংস্কৃত-বাংলার ছন্দের সঙ্গে সে বহুরে সমান হতে পারে, কিন্তু সুতোর মাপকে কি আদর্শ বলে ধরা शा? । ১. হেলন্ত শব্দ স্বরান্ত অর্থে প্রযুক্ত ।