পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

卤际 ܬ ܬ ܠ ছন্দের দুটি জিনিস দেখবার আছে- এক হচ্ছে তার সমগ্র অবয়ব, আর তার সংঘটন । পয়ারের অবয়বের মাত্রাসমষ্টি যোলো সংখ্যায়। এই ষোলো মাত্রা সংঘটিত হয়েছে দুই মাত্রার অংশযোজনায় । ধ্বনিরাপসৃষ্টিতে দুই সংখ্যার একটি বিশেষ প্রভাব আছে, তিন সংখ্যা থেকে তা সম্পূৰ্ণ স্বতন্ত্র । দুষ্টান্ত দেখাই শ্রাবণধারে সঘনে কাদিয়া মরে যামিনী, ছোটে তিমিরগগনে পথহারানো দামিনী । এই ছন্দটির সমগ্ৰ অবয়ব যোলো মাত্রায় । সেই ষোলো মাত্রাটি সংঘটিত হচ্ছে তিন-দুই-তিন মাত্রার যোগে, এইজন্যেই পয়ারের মতো এর চাল-চলন নয়। যে আট মাত্রা দুইয়ের অংশ নিয়ে সে চলে সোজা সোজা পা ফেলে, কিন্তু যে আট মাত্রা তিন দুই-তিনের ভাগে সে চলছে হেলতে দুলতে भळभन् । চেয়ে থাকে মুখপানে, সে চাওয়া নীরব গানে মনে এসে বাজে, যেন ধীর ধ্রুবতারা কহে কথা ভাষাহারা জনহীন সাঝে । যতিমাত্রাসমেত চব্বিশ মাত্রায় এই ত্রিপদীর অবয়ব । এই চব্বিশ মাত্রা দুই মাত্রাখণ্ডের সমষ্টি, এইজনোই একে পয়াবশ্রেণীতে গণ্য করব । রিমি ঝিমি বরিষে শ্ৰাবণধারা, ঝিল্লি ঝনকিছে ঝিনি ঝিনি : তাকায়ে পথপানে বিরাহিণী । এ ছন্দেরও অবয়ব চব্বিশ মাত্রায় । কিন্তু, এর গড়ন স্বতন্ত্র, এর অংশগুলি দুই-তিনের মিশ্ৰিত মাত্ৰা । পয়ার ছন্দের বিশেষ গুণ এই যে, তার বুনোনি ঠাসবুনোনি নয়, তাকে বাড়ানো-কমানো যায় । সুর করে টেনে টেনে পড়বার সময় কেউ যদি যতির যোগে পয়ারের প্রথম ভাগে দশ ও শেষ ভাগে আট মাত্রা পড়ে। তবু পয়ারের প্রকৃতি বজায় থাকে । যেমন মহাভারতের কথা ০ ০ | অমৃতসমান ০ ০ ৷৷ কাশীরাম দাস ভনে ০ ০ | শুনে পুণ্যবান ০ ০ ৷৷ মহা ০ ০ ভারতের কথা ০ 0 | অমৃত ০ ০ সময় ০ ০ােন । কাশীরা ০ ০ মি দাস ভনে ০ ০ + শুনে ০ ০ পুণ্যবা ০ ০ না। পয়ার ছন্দ স্থিতিস্থাপক বলেই এটা সম্ভব, আর সেই গুণেই বাংলা কাব্যসাহিত্যকে সে এমন করে अक्षिक: कद्भ८ ।। প্রচলিত । পয়ারের ব্যবহার প্রধানত আখ্যানে রামায়ণ-মহাভারত-মঙ্গলকাব্য প্রভৃতিতে । তিন মাত্রা মূলক ছন্দ গীতিকাব্যে, যেমন বৈষ্ণব-পদাবলীতে। পূর্বেই বলেছি। পয়ারের চাল পদাতিকের চাল, পা ফেলে ফেলে চলে। অভিসারযাত্রাপথে হৃদয়ের ভার পদে পদে দেয়। বক্ষে ব্যাথার কংকার ।