পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V9 RNR রবীন্দ্র-রচনাবলী কিংবা- টুমুস টুমুস বান্দ্যি বাজে, লোকে বলে, কী, শামুকরাজা বিয়ে করে ঝিনুকরাজার বি । Y V8S গদ্যছন্দ গদা বলতে বুঝি যে ভাষা আলাপ করবার ভাষা ; ছন্দোবদ্ধ পদে বিভক্ত যে ভাষা। তাই পদ্য । আর, রসাত্মক বাকাকেই আলংকারিক পণ্ডিত কাব্য সংজ্ঞা দিয়েছেন । এই রসাত্মক বাক্য পদ্যে বললে সেটা হবে পদাকাব্য আর গদ্যে বললে হবে, গদ্যকাব্য । গদ্যেও অকাব্য ও কুকাব্য হতে পারে, পদ্যেও তথৈবচ । গদো তার সম্ভাবনা বেশি, কেননা ছন্দেরই একটা স্বকীয় রস আছে- সেই ছন্দকে তাগ করে যে কাবা, সুন্দরী বিধবার মতো তার অলংকার তার আপনি বাণীদেহেই, বাইরে নয় । এ কথা বলা বাহুল্য যে, গদাকাব্যেও একটা আবাধা ছন্দ আছে । আন্তরিক প্রবর্তনা থেকে কাব্য সেই ছন্দ চলতে চলতে আপনি উদ্ভাবিত করে, তার ভাগগুলি অসম হয়। কিন্তু সবসুদ্ধ জড়িয়ে ভারসামঞ্জস্য থেকে সে স্বলিত হয় না। বড়ো ওজনের সংস্কৃত ছন্দে এই আপাতপ্রতীয়মান মুক্তিগতি দেখতে পাওয়া যায় । re মেঘৈর মেদুর | মম্বরং বনভুব: || শ্যামান্তম || লক্ৰমৈঃ । এই ছন্দ সমান ভাগ মানে না, কিন্তু সমগ্রের ওজন মেনে চলে। মুখের কথায় আমরা যখন খবর দিই তখন সেটাতে নিশ্বাসের বেগে ঢেউ খেলায় না । যেমন তার চেহারাটা মন্দ নয় । কিন্তু ভাবের আবেগ লাগবামাত্র আপনি ঝোক এসে পড়ে । যেমন কী সুন্দর তার চেহারাটি । একে ভাগ করলে এই দাঁড়ায়: কী সুন | দীর তার | চেহারাটি । মরে যাই তোমার বালাই নিয়ে । এত গুমার সইবে না গো, সইবে না- এই বলে দিলুম। কথা কয় নি তো কয় নি চলে গেছে সামনে দিয়ে, বুক ফেটে মারব না। তাই বলে । এ-সমন্তই প্রতিদিনের চলতি কথার সহজ ছন্দ, গদ্য, কাব্যের গতিবেগে আত্মরচিত । মনকে খবর দেবার সময় এর দরকার হয় না, ধাৰকা দেবার সময় আপনি দেখা দেয়, ছান্দসিকের দাগ-কাটা মাপকাঠির অপেক্ষা রাখে না । ইতি ২২ মে ১৯৩৫