পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

93(2) \ර්GO এশিয়ার অবসাদচ্ছায়াকে । আনন্দ পেলুম, মনে ভয়ও হল । দেখলুম জাপান যুরোপের অস্ত্ৰ আয়ত্ত করে এক দিকে নিরাপদ হয়েছে, তেমনি অন্য দিকে গভীরতর আপদের কারণ ঘটল । তার রক্তে প্রবেশ করেছে। যুরোপের মায়ী, যাকে বলে ইস্পীরিয়ালিজম, সে নিজের চারিদিকে মথিত করে তুলছে বিদ্বেষ । তার প্রতিবেশীর মনে জ্বালা ধরিয়ে দিল । এই প্রতিবেশীকে উপেক্ষা করবার নয়, আর এই জ্বালায় ভােবীকালের অগ্নিকাণ্ড কেবল সময়ের অপেক্ষা করে। ইতিহাসে ভাগের অনুকূল হাওয়া নিরন্তর বয় না। এমন দিন আসবেই যখন আজ যে দুর্বল তারই কাছে কড়ায় গণ্ডায় হিসাব গানে দিতে হবে। কী করে মিলতে হয়। জাপান তা শিখল না, কী করে মারতে হয় যুরোপের কাছ থেকে সেই শিক্ষাতেই সে হাত পাকিয়ে নিলে। এই মার মাটির নীচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে একদিন এসে ছোবল মারবে তারই বুকে । কিন্তু এতে রাষ্ট্রনৈতিক হিসাবের ভুল হল বলেই এটা শোচনীয় এমন কথা আমি বলি নে। আমি এই বলতে চাই, এশিয়ায় যদি নতুন যুগ এসেই থাকে। তবে এশিয়া তাকে নতুন করে আপনি ভাষা দিক । তা না করে যুরোপের পশুগার্জনের অনুকরণই যদি সে করে সেটা সিংহনাদ হলেও তার হার । ধার-করা রান্তা যদি গর্তের দিকে যাবার রান্ত হয় তা হলে তার লজা দ্বিগুণ মাত্রায় । যা হােক, এশিয়ার পশ্চিমপ্রান্ত যে ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে তার খবর দূর থেকে শোনা যায়। যখন ভাবছিলুম তুরুস্ক এবার ডুবল তখন হঠাৎ দেখা দিলেন কামালপাশা। তখন তাদের বড়ো সাম্রাজ্যের জোড়াতাড়া অংশগুলো যুদ্ধের ধাক্কায় গেছে ভেঙে । সেটা শাপে বর হয়েছিল । শক্ত করে নতুন করে রাজ্যটাকে তার স্বাভাবিক ঐক্যে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গড়ে তোলা সহজ হল ছোটাে পরিধির মধ্যে। সাম্রাজ্য বলতে বোঝায়, যারা আত্মীয় নয় তাদের অনেককে দড়ির বাধনে বেঁধে কলেবরটাকে অস্বাভাবিক স্কুল করে তোলা । দুঃসময়ে বাধন যখন ঢিলে হয় তখন এই অনান্ধীয়ের সংঘাত বঁচিয়ে আত্মরক্ষা দুঃসাধ্য হতে থাকে । তুরুস্ক হালকা হয়ে গিয়েই যথার্থ আঁট হয়ে উঠল। তখন ইংলন্ড তাকে তাড়া করেছে গ্ৰীসকে তার উপর লেলিয়ে দিয়ে । ইংলন্ডের রাষ্ট্ৰতক্তে তখন বসে আছেন লয়েড জর্জ ও চাৰ্চিহিল। ১৯২১ খৃস্টোব্দে ইংলন্ডে তখনকার মিত্ৰশক্তিরা একটা সভা ডেকেছিলেন । সেই সভায় আঙ্গোরার প্রতিনিধি বেকির সামী তুরুস্কের হয়ে যে প্রস্তাব করেছিলেন তাতে তাদের রাষ্ট্ৰীয় স্বাৰ্থ অনেকটা পরিমাণে ত্যাগ করতেই রাজি হয়েছিলেন । কিন্তু গ্ৰীস আপন ষোলো-আনা দাবির ‘পরেই জেদ ধরে বসে রইল, ইংলন্ড পশ্চাৎ থেকে তার সমর্থন করলে। অর্থাৎ কালনেমি-মামার লঙ্কাভাগের উৎসাহ তখনো খুব ঝাঝালো ছিল । এই গোলমালের সময় তুরস্ক মৈত্রী বিস্তার করলে ফ্রান্সের সঙ্গে । পারস্য এবং আফগানিস্থানের সঙ্গেও তার বোঝাপড়া হয়ে গেল। আফগানিস্থানের সন্ধিপত্রের দ্বিতীয় দফায় লেখা আছে : The contracting parties recognize the emancipation of the nations of the East and confirm the fact of their unrestricted freedom... their right to be independent and to govern themselves in whatever manner they themselves choose. এ দিকে চলল। শ্ৰীস তুরুস্কের লড়াই। এখনো আঙ্গোরা-পক্ষ রক্তপাত-নিবারণের উদ্দেশে বার বার সন্ধির প্রস্তাব পাঠালে। কিন্তু ইংলন্ড ও শ্ৰীস তার বিরুদ্ধে অবিচলিত রইল । শেষে সকল কথাবার্তা থামল শ্ৰীসের পরাজয়ে । কামালপাশার নায়কতায় নূতন তুরুস্কের প্রাণপ্ৰতিষ্ঠা হল আঙ্গোরা রাজধানীতে । নব তুরুস্ক এক দিকে যুরোপকে যেমন সবলে নিরন্ত করলে আর-এক দিকে তেমনি সবলে তাকে গ্ৰহণ করলে অন্তরে বাহিরে । কামালপাশা বললেন, মধ্যযুগের অচলায়তন থেকে তুরুস্ককে মুক্তি নিতে হবে । আধুনিক যুরোপে মানবিক চিত্তের এই মুক্তিকে তারা শ্ৰদ্ধা করেন। এই মোহমুক্ত চিত্তই বিশ্বে আজ বিজয়ী। পরাভাবের দুৰ্গতি থেকে আত্মরক্ষা করতে হলে এই বৈজ্ঞানিক চিত্তবৃত্তির উদবোধন *Gí elsti bs | FCGI fðisfTST's NTGís', 'Mediaeval principles must give